রবিবার, ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫| রাত ১০:০৭

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুতের পরিকল্পনা করেছিল ভারত

প্রতিবেদক
staffreporter
জানুয়ারি ১, ২০২৫ ৩:৪৯ অপরাহ্ণ
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুতের পরিকল্পনা করেছিল ভারত

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুতের পরিকল্পনা করেছিল ভারত

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরিকল্পনা করেছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে জানানো হয়, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসে তাদের একজন এজেন্টের মাধ্যমে এই ষড়যন্ত্রের নকশা তৈরি করে।

প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে চীনপন্থি অবস্থানে দাঁড়িয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। তার পরপরই তিনি মালদ্বীপে থাকা ভারতীয় সেনাদের প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেন, যা দিল্লির জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি পরাজয় হিসেবে বিবেচিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরিকল্পনা তৈরি হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিকল্পনায় নেতৃত্ব দেন দুই ভারতীয় মধ্যস্থতাকারী। এদের একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শিরিশ থোরাত, যিনি মালদ্বীপে বেসরকারি নিরাপত্তাবাহিনীর ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেছিলেন। তার সঙ্গে মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ নিশাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। অপরজন সাভিও রদ্রিগেজ, একজন গোয়াভিত্তিক প্রকাশক, যিনি একসময় ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মুখপাত্র ছিলেন। তাদের মাধ্যমে মালদ্বীপে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রভাব খাটিয়ে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করা হয়।

এদিকে, দেশটির বিরোধী দলও মুইজ্জুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধীরা ভারতের কাছ থেকে ৬ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা চাইছিল। এই অর্থ দিয়ে প্রেসিডেন্টের দলীয় এমপি, পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ অন্তত ৪০ জন এমপি এবং স্থানীয় কয়েকটি প্রভাবশালী গ্যাংকে ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল, পার্লামেন্টে মুইজ্জুর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে তাকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা।

তবে, শেষ পর্যন্ত এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়। ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, ষড়যন্ত্রের কার্যক্রম বিভিন্ন স্তরে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এটি আর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, মালদ্বীপের মতো কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশে চীনপন্থি সরকারের উপস্থিতি ভারতের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি। তাই দিল্লি এমন উদ্যোগ নিতে চাইছে, যাতে তারা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিজেদের প্রভাব ধরে রাখতে পারে।

এই খবর প্রকাশের পর আন্তর্জাতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। ভারত এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে এই ধরনের কর্মকাণ্ড আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - সর্বশেষ