হিজাব-নেকাব পরা ছাত্রীদের পরিচয় শনাক্তে নতুন সিদ্ধান্ত ঢাবির
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সম্প্রতি হিজাব ও নেকাব পরিহিত ছাত্রীদের পরিচয় শনাক্তকরণে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও গোপনীয়তা রক্ষার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
৬ মার্চ ২০২৫ তারিখে ঢাবির উপাচার্যের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ডিনস কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নেকাব ও হিজাব পরিহিত ছাত্রীদের পরিচয় শনাক্তকরণের জন্য নারী শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। প্রয়োজনে নারী সহকারী প্রক্টরের সহযোগিতাও নেওয়া হবে। এছাড়া, ভবিষ্যতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা বায়োমেট্রিক সিস্টেম চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে।
এই সিদ্ধান্তের পেছনে সাম্প্রতিক একটি ঘটনার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। ঢাবির বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের তৃতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা চলাকালে তাহমিনা তামান্না নামের এক ছাত্রীকে পরিচয় শনাক্তের জন্য নেকাব খুলতে বলা হয়। প্রথমে তিনি নেকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানালেও, পরে নারী শিক্ষকের উপস্থিতিতে নেকাব খুলে পরিচয় নিশ্চিত করেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয় এবং প্রশাসন এই নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। তারা মনে করেন, এই নীতিমালা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও গোপনীয়তা রক্ষার পাশাপাশি পরিচয় শনাক্তকরণ প্রক্রিয়াকে সহজ করবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও আশা প্রকাশ করেছে যে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এ ধরনের বিতর্ক এড়ানো সম্ভব হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নতুন নীতিমালা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও গোপনীয়তা রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি করবে এবং পরিচয় শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্যও একটি উদাহরণ হতে পারে।