বুধবার, ১২ই মার্চ, ২০২৫| রাত ৯:৩৭

যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম বিদ্বেষ রেকর্ড সংখ্যক বেড়েছে

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ১২, ২০২৫ ৫:৩১ অপরাহ্ণ
যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম বিদ্বেষ রেকর্ড সংখ্যক বেড়েছে

যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম বিদ্বেষ রেকর্ড সংখ্যক বেড়েছে

যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম বিদ্বেষ সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সমাজের বিভিন্ন স্তরে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে, ইসরায়েল-গাজা সংঘর্ষের পর থেকে মুসলিম ও আরব আমেরিকানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক অপরাধ ও বৈষম্যের ঘটনা বেড়েছে।

ইসরায়েল-গাজা সংঘর্ষের পর যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম ও আরব আমেরিকানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে। এই সময়ে মুসলিম ও আরব সম্প্রদায়ের সদস্যরা হুমকি, হয়রানি এবং শারীরিক আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এই পরিস্থিতি মুসলিম ও আরব আমেরিকানদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

এই পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায়, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন মুসলিম ও আরব বিদ্বেষ মোকাবিলায় একটি ৬৪ পৃষ্ঠার কৌশলপত্র প্রকাশ করে। এই কৌশলপত্রে বিদ্বেষমূলক অপরাধ, বৈষম্য এবং বুলিং প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন এই কৌশলপত্রের ভূমিকায় উল্লেখ করেন যে, মুসলিম ও আরব আমেরিকানরা মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের অধিকারী এবং তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক নীতি গ্রহণ করা ভুল এবং নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর।

কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (CAIR) এই কৌশলপত্রকে “অত্যন্ত সামান্য, অত্যন্ত দেরিতে” বলে সমালোচনা করেছে। তারা ফেডারেল ওয়াচলিস্ট এবং “নো-ফ্লাই” তালিকা, যা অনেক আরব ও মুসলিম আমেরিকানকে অন্তর্ভুক্ত করে, বাতিল করার দাবি জানিয়েছে। তাদের মতে, এই তালিকাগুলো মুসলিম ও আরব আমেরিকানদের প্রতি বৈষম্যমূলক এবং তাদের নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন করে।

প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সময় মুসলিম প্রধান দেশগুলোর নাগরিকদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, যা বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় এসে বাতিল করে। তবে, ট্রাম্প পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে মুসলিম বিদ্বেষী নীতিগুলো পুনর্বহাল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি ইসরায়েলের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা এবং “ইহুদিবিদ্বেষী” বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করার প্রস্তাব দিয়েছেন।

মুসলিম বিদ্বেষের এই বৃদ্ধি যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম ও আরব সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অনেকেই তাদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত। এটি সমাজে বিভাজন ও অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি করতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রের বহুত্ববাদী মূল্যবোধের পরিপন্থী।

যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম বিদ্বেষের বৃদ্ধি একটি গুরুতর সমস্যা, যা সমাধানে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন। বিদ্বেষমূলক অপরাধ ও বৈষম্য প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। এতে সমাজে সহনশীলতা ও ঐক্য বৃদ্ধি পাবে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - সর্বশেষ