বুধবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৫| রাত ৩:০০

হংকং ইস্যুতে চীনের পাল্টা নিষেধাজ্ঞা: মার্কিন এমপি, কর্মকর্তা ও এনজিও প্রধানরা তালিকায়

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ২২, ২০২৫ ৮:৪৫ অপরাহ্ণ
হংকং ইস্যুতে চীনের পাল্টা নিষেধাজ্ঞা: মার্কিন এমপি, কর্মকর্তা ও এনজিও প্রধানরা তালিকায়

হংকং ইস্যুতে চীনের পাল্টা নিষেধাজ্ঞা: মার্কিন এমপি, কর্মকর্তা ও এনজিও প্রধানরা তালিকায়

চীন হংকং ইস্যুতে ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’র অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং এনজিও প্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে ওয়াশিংটন গত মাসে ছয়জন চীনা ও হংকং কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।

গুয়ো জিয়াকুন নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা বা তাদের বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করেননি। ফলে কতজন আইনপ্রণেতা, কর্মকর্তা বা এনজিও প্রধান এই তালিকায় রয়েছেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ববর্তী পদক্ষেপের জবাবে দেওয়া হয়েছে। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “হংকং সম্পর্কিত ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো ভুল পদক্ষেপের জবাবে চীন সবসময় এমন দৃঢ় ও পাল্টা পদক্ষেপ নেবে।”

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক গত কয়েক বছর ধরে ক্রমশ তিক্ত হচ্ছে। বিশেষ করে তাইওয়ান, হংকং এবং অর্থনৈতিক ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। বেইজিংয়ের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান ও হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করছে। অন্যদিকে, ওয়াশিংটনের দাবি, চীন এই অঞ্চলগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে এবং স্বাধীনতা হরণের নীতি গ্রহণ করেছে।

বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রতি সবসময় কঠোর মনোভাব পোষণ করেছেন। ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় তিনি অভিযোগ করেছিলেন, চীনের একটি গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। যদিও পরবর্তী তদন্তে এই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়নি। এছাড়া, ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছেন। জবাবে চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে। এই বাণিজ্য যুদ্ধ দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্প্রতি বিশ্বের সব দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, কোনো দেশ যেন চীনের স্বার্থকে উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি না করে। এই বক্তব্য চীনের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক প্রভাব এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়।

হংকং ইস্যুতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা দীর্ঘদিন ধরে চলছে部分

System: চলছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হংকংয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার ও স্বাধীনতার দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে, যা চীন সরকারের কঠোর জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দিকে নিয়ে গেছে। এই আইনের সমালোচকরা বলছেন, এটি হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতাকে সীমিত করছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো এই আইনের নিন্দা করেছে এবং চীনা কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

চীনের এই পাল্টা নিষেধাজ্ঞা কেবল রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াই নয়, বরং দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রতিফলন। এটি বিশ্ব অর্থনীতি ও ভূ-রাজনীতির ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আগামী দিনগুলোতে এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব এবং দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক কীভাবে এগোয়, তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

সূত্র: রয়টার্স

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত