র্যাব-ডিজিএফআই: জাতিসংঘের সুপারিশকে স্বাগত জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের প্রতিবেদনটি দেশে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে র্যাব বিলুপ্তি এবং বিজিবি ও ডিজিএফআই-এর কার্যক্রম সীমিত করার সুপারিশকে ঘিরে আলোচনা চলছে। তবে, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এই সুপারিশকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “সরকার এটা ভালভাবে গ্রহণ করেছে। এখন আমরা বসে সিদ্ধান্ত নিব।”
বুধবার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, “জাতিসংঘের সুপারিশকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করব এবং প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেব।” জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় র্যাব বিলুপ্তির পাশাপাশি বিজিবি ও ডিজিএফআই-এর কার্যক্রম সীমিত করতে বলা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, র্যাবের বিলুপ্তি জরুরি এবং বিজিবি ও ডিজিএফআইকে শুধুমাত্র সীমান্তরক্ষা এবং সামরিক গোয়েন্দা কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আনসার-ভিডিপির ওপর সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সহায়কেরূপে ব্যবহারের সুপারিশও করা হয়েছে।
এছাড়া, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, প্রতিবেদনটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগত ও কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার টুর্ক এবং তার দল গত বছরের জুলাই-অগাস্টে বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের পরবর্তী মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেছিলেন। সেই অনুসন্ধানী দলটি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে এসে প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
এদিকে, জাতিসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান ররি মুনগোভেনের নেতৃত্বে ওই তদন্ত দলটি ফরেনসিক চিকিৎসক এবং অস্ত্র বিশেষজ্ঞের সহায়তায় তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। তবে, এই প্রতিবেদন এবং সুপারিশ বাংলাদেশের সরকারের কাছে এক চ্যালেঞ্জ হতে পারে, বিশেষত তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা কার্যক্রমের ব্যাপারে।
বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি পেলেও, দেশের সরকার নিশ্চয়তা দিয়েছে যে তারা এই বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করবে।