তালহা জুবায়ের: পরিশ্রমী কোচের এক অনন্য দৃষ্টান্ত
‘কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে’—শৈশব থেকেই পরিচিত এই কথার বাস্তব উদাহরণ যেন তালহা জুবায়ের। খুলনা টাইগার্সের কোচ হিসেবে বিপিএলে তাঁর তীব্র আবেগ, নিবেদন আর লড়াই করার মানসিকতা দর্শকদের নজর কেড়েছে। ক্রিকেট মাঠে সাধারণত কোচদের চুপচাপ থাকতে দেখা যায়, কিন্তু তালহা যেন সেই ধারা ভেঙে দিয়েছেন। প্রতিটি মুহূর্তে জয়লাভের আকাঙ্ক্ষা ফুটে উঠেছে তাঁর চোখে-মুখে।
গতকাল দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চিটাগাং কিংসের কাছে মাত্র ৩ উইকেটে হেরে ফাইনালের স্বপ্ন ভেঙেছে খুলনার। শেষ বলে আলিস আল ইসলামের চার মেরে জয় নিশ্চিত করার মুহূর্তে খুলনার ডাগআউটে নেমে আসে নিস্তব্ধতা। হারের পর রাতে ঘুমাতে পারেননি কোচ তালহা জুবায়ের। আজ সকালে এক সাক্ষাৎকারে জানান, শেষ বলের দৃশ্য ভুলতে পারছেন না তিনি। তরুণ পেসার মুশফিক হাসানকে আগলে রেখেছেন, কারণ তাঁর দুটি টানা উইকেটই খুলনাকে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াইয়ে রেখেছিল। তবে শেষ বলের আগে সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধায় পড়ে যান মুশফিক, যে কারণে জয় হাতছাড়া হয়।
মুশফিক হারের পর কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন, কিন্তু কোচ হিসেবে তালহা তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছেন, ভবিষ্যতে ভালো করার আশ্বাসও দিয়েছেন। কোচের দায়িত্ব শুধু ম্যাচ জেতানো নয়, তরুণ খেলোয়াড়দের গড়ে তোলার কাজও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
খুলনার দলে বড় কোনো বিদেশি তারকা না থাকলেও দেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া। নাঈম শেখ, মাহিদুল অঙ্কন, মেহেদী মিরাজ, রনি তালুকদারদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন তালহা। আফিফ হোসেনকে সুযোগ দেওয়া হলেও তিনি কাজে লাগাতে পারেননি, যা কোচের জন্য আক্ষেপের। মাহমুদুল হাসান জয়কে একটি ম্যাচেও খেলাতে না পারায় খারাপ লেগেছে তাঁর।
শিরোপা জিততে না পারলেও, দল হিসেবে খুলনা টাইগার্স জিতে নিয়েছে দর্শকদের ভালোবাসা। সামাজিক মাধ্যমে ভক্তদের প্রতিক্রিয়া সেটাই প্রমাণ করে। তালহার মতে, খুলনার সমর্থকরা দলের পাশে ছিল, আর তাঁদের জন্যই খারাপ লাগছে, কারণ দল তাঁদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। তবে তিনি আশা রাখেন, ভবিষ্যতে আরও ভালো করার সুযোগ আসবে।
তালহা জুবায়ের হয়তো ট্রফি জিততে পারেননি, কিন্তু তাঁর আবেগ, পরিশ্রম, নিবেদন এবং কোচিং স্টাইল ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা করে নেবে।