পুরস্কারপ্রাপ্তদের পেছনে দাঁড় করিয়ে ফটোসেশন, যা বললেন ফারুকী
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের পেছনে দাঁড় করিয়ে ফটোসেশন নিয়ে সমালোচনার জবাব দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক শুরু হলে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে ফেসবুকে একটি ব্যাখ্যামূলক পোস্ট দেন তিনি।
ফারুকী লেখেন, “পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণীজনদের গ্রুপ ফটোসেশন নিয়ে নানারকম আলোচনা হচ্ছে। সবাই জানেন, সরকার বা পুরস্কার প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মঞ্চে পুরস্কারপ্রাপ্তদের গ্রুপ ছবি তোলার একটি রেওয়াজ আছে। কিন্তু আমরা তো সংস্কার করতে আসা সরকার। আমাদের কেন রেওয়াজ মানতে হবে?”
তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠান থেকে এই রীতি বাতিল করা হবে। গ্রুপ ফটোসেশন কোথায় ও কীভাবে হবে, তা নিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করছে।
এদিকে, ফারুকীর পোস্টের একটি অংশ রাজনৈতিক প্রসঙ্গেও চলে যায়। তিনি লেখেন, “মাত্র ছয় মাস হলো আমরা একটি খুনি-সাইকোপ্যাথের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছি। যে শত শত মানুষকে গুম করেছে, হাজার হাজার বিরোধী মতের মানুষকে হত্যা করেছে, জুলাইয়ে নারকীয় গণহত্যা চালিয়েছে, সেই খুনির সঙ্গে শিষ্টাচার? হিটলারের সঙ্গে শিষ্টাচার? প্রিয় খুনি, আপনি আমার প্রণাম গ্রহণ করুন— এমনটা কি সম্ভব?”
প্রসঙ্গত, গত শনিবার অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাতজন সাহিত্যিকের হাতে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকীও উপস্থিত ছিলেন। তবে ফটোসেশনের সময় পুরস্কারপ্রাপ্তদের অতিথিদের পেছনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
বিশেষ করে এ বছরের প্রবন্ধ/গদ্যে পুরস্কারপ্রাপ্ত সলিমুল্লাহ খানও সেই কাতারে ছিলেন, যা নিয়ে বিতর্ক আরও বেড়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন সাহিত্যিকদের পেছনে রেখে অতিথিদের সামনে রাখা হলো। সমালোচকদের মতে, এ ধরনের চিত্র পুরস্কারের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে এবং গুণীজনদের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করে।
ফারুকীর ব্যাখ্যার পরও বিতর্ক পুরোপুরি থামেনি। অনেকে এটিকে পুরনো রীতির অবসান হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ বলছেন, গুণীজনদের সম্মান রক্ষার জন্য আরও সংবেদনশীল হওয়া উচিত ছিল।