ট্রাম্পের শপথের পর যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় গ্যাস চুক্তি বাংলাদেশের সঙ্গে
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে করা সবচেয়ে বড় গ্যাস সরবরাহ চুক্তির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাংলাদেশ। মার্কিন প্রতিষ্ঠান আর্জেন্ট এলএনজি বাংলাদেশের সঙ্গে ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের নন-বাইন্ডিং চুক্তি সই করেছে। গতকাল শুক্রবার প্রতিষ্ঠানটি এ খবর নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এ চুক্তি শুধু ট্রাম্প প্রশাসনের জ্বালানি পরিকল্পনার সফলতাই নয়, বরং বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণের যুগান্তকারী পদক্ষেপ। উল্লেখযোগ্যভাবে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানির উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়ানোর যে অঙ্গীকার করেছিলেন, এই চুক্তি তা বাস্তবায়নের এক মাইলফলক।
লুইজিয়ানার পোর্ট ফোরচনে অবস্থিত আর্জেন্ট এলএনজি বর্তমানে ২৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা বাড়ানোর অবকাঠামো নির্মাণ করছে। বাংলাদেশের পেট্রোবাংলাকে গ্যাস সরবরাহ শুরু করতে এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় তরলীকৃত গ্যাস সরবরাহকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এখন তার অবস্থান আরও শক্তিশালী করছে। ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বব্যাপী মার্কিন জ্বালানির বাজার সম্প্রসারণের যে উদ্যোগ নিয়েছিল, তা এ চুক্তির মধ্য দিয়ে নতুন মাত্রা পেল। মার্কিন জ্বালানি বিভাগ সম্প্রতি যেসব দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই, সেসব দেশে গ্যাস রপ্তানি সহজ করার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। বাংলাদেশের সঙ্গে এ চুক্তি ট্রাম্পের সেই কৌশলেরই ফল।
বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী রয়টার্সকে বলেছেন, “এ চুক্তি শুধু বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্পখাতের গ্যাস চাহিদা মেটাবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত সম্পর্ক আরও গভীর করবে।”
বিশ্বব্যাপী গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ কয়লার দিকে ঝোঁকছিল। তবে এই চুক্তি দেশটির জ্বালানি চাহিদা পূরণের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হিসেবে কাজ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গ্যাস সরবরাহ চুক্তির এ পদক্ষেপ দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি প্রভাব বিস্তারের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্ববাজারে জ্বালানির সংকট দেখা দিলেও, যুক্তরাষ্ট্রের এ উদ্যোগ জ্বালানি সরবরাহে নতুন দিশা দেখাচ্ছে। চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক লক্ষ্য দুটোই পূরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।