ইসরায়েলে মুহুর্মুহু ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাল হিজবুল্লাহ
লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রায় আড়াই শ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। গতকাল রোববার রাতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এ হামলার খবর জানিয়েছে। অন্যদিকে, হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চল ও তেল আবিব।
হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে আশদ নৌঘাঁটিতে ড্রোন ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। পরে, অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে তারা তেল আবিবের একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা চালায়। পাশাপাশি, তেল আবিবের উপকণ্ঠে গ্লিলট সেনাবাহিনী গোয়েন্দা ঘাঁটিতেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা হয়।
হামলার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানতে প্রথমে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এএফপির কাছে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে, পরে তারা জানায়, ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে, যা আকাশপথে হামলা হলে বাজানো হয়। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, প্রায় আড়াই শ ক্ষেপণাস্ত্র লেবানন থেকে ইসরায়েলে প্রবেশ করেছে, যার মধ্যে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে ধ্বংস করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে ইসরায়েল লেবাননের রাজধানী বৈরুতে কয়েকটি হামলা চালিয়ে মোহাম্মদ আফিফ নামের হিজবুল্লাহর একজন মুখপাত্রকে হত্যা করে। এর পরেই, হিজবুল্লাহপ্রধান নাইম কাসেম ঘোষণা দেন যে, বৈরুতে হামলার জবাব হিসেবে তেল আবিবে হামলা চালানো হতে পারে।
চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী বিভিন্ন সংস্থার বরাত দিয়ে জানানো হয়, গতকালের হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। একই সময়, ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, পশ্চিম তীরের তুলকারেম শরণার্থী শিবিরে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ১৩ জন আহত হন।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ইসরায়েল লেবাননে হামলা জোরদার করেছে। প্রথমে আকাশপথে হামলা শুরু হলেও পরে ইসরায়েলি সেনারা দক্ষিণ লেবাননে প্রবেশ করে। ২৪ সেপ্টেম্বর, হিজবুল্লাহ একদিনে ৩৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে ছুড়ে মারে, যা এখন পর্যন্ত এক দিনের সর্বোচ্চ হামলা ছিল।
ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যকার দ্বন্দ্ব পুরোনো। ২০০৬ সালে তারা একটি যুদ্ধেও জড়িয়েছিল এবং গত বছর অক্টোবর থেকে গাজা যুদ্ধে উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে হামলার তীব্রতা বেড়ে গেছে। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩,৬৭০ জন নিহত হয়েছেন।