রবিবার, ১৫ই জুন, ২০২৫| সকাল ১১:৫৫

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত, দুই শতাধিক আহত

প্রতিবেদক
staffreporter
জুন ১১, ২০২৫ ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত, দুই শতাধিক আহত

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত, দুই শতাধিক আহত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় মাত্র একদিনে অন্তত ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা দুই শতাধিক বলে জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রার্থীরাও রয়েছেন।

স্থানীয় চিকিৎসকরা ও আল জাজিরা সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোর থেকে গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি হামলা চালিয়ে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজায় বর্তমানে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তাছাড়া গাজার কেন্দ্রীয় অংশে ইসরায়েলি বাহিনী ‘নেতসারিম করিডর’ এলাকায় সামান্য খাবার সংগ্রহ করতে আসা মানুষের ওপর গুলি চালায়, এতে অন্তত ২০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে রয়েছে ১২ বছর বয়সী মোহাম্মদ খলিল আল-আথামনেহ নামের এক শিশু। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০০ জন।

এই ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলো চালাচ্ছে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) নামক একটি বিতর্কিত সংস্থা, যা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে কাজ করছে এবং ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কার্যক্রম চালায়। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা এই কেন্দ্রগুলোকে ‘মানব কসাইখানা’ হিসেবে অভিহিত করেছে, কারণ ২৭ মে থেকে সংস্থাটি ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করার পর ১৫০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি এবং প্রায় ১৫০০ জন আহত হয়েছেন।

গাজার তথ্য অফিস জানিয়েছে, জিএইচএফ কার্যত ‘মরণ ফাঁদে’ পরিণত হয়েছে, যেখানে ত্রাণ প্রলোভনে ক্ষুধার্ত মানুষদের টেনে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। তারা বলেছে, “জিএইচএফ এখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

আল জাজিরার গাজার সাংবাদিক তারেক আবু আজ্জুম বলেন, এসব ত্রাণকেন্দ্র “পুনরাবৃত্ত রক্তপাতের মঞ্চ” হয়ে উঠেছে, যেখানে পরিকল্পিতভাবে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। ইসরায়েলি সেনারা ড্রোন, ট্যাংক ও স্নাইপার ব্যবহার করে এসব কেন্দ্রে অভিযান চালাচ্ছে।

এদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজায় মানবিক সংকট ‘অভূতপূর্ব হতাশার পর্যায়ে’ পৌঁছেছে। মে মাসের শেষ সপ্তাহে ৫ বছরের কম বয়সী কমপক্ষে ২৭০০ শিশুকে চরম অপুষ্টিতে ভুগতে দেখা গেছে। দ্রুত মানবিক সহায়তা চালুর আহ্বান জানানো হয়েছে।

গাজায় চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল কঠোর অবরোধ আরোপ করেছে। জিএইচএফ-এর মাধ্যমে অল্প কিছু ত্রাণ ঢুকলেও বহু আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় ত্রাণ সংস্থা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যার ফলে দীর্ঘদিন ধরে গাজার লাখো মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছানো কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি