কাশ্মীরে দাঙ্গা বাধাতে চেয়েছিল পাকিস্তান, জনগণ দিয়েছে জবাব: নরেন্দ্র মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তান কাশ্মীরে দাঙ্গা বাধাতে চেয়েছিল, কিন্তু সেখানকার জনগণ ও যুবশক্তি তা রুখে দিয়েছে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে। শুক্রবার জম্মু-কাশ্মীর সফরে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। সম্প্রতি পহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার পর এই প্রথম তিনি অঞ্চলটি পরিদর্শন করলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান কেবল মানবতারই নয়, ‘কাশ্মিরিয়ত’-এরও বিরোধী। শতাব্দীপ্রাচীন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ধর্মীয় সহাবস্থানের ঐতিহ্য ‘কাশ্মিরিয়ত’-কে ধ্বংস করতেই পাকিস্তান হামলার পথ বেছে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, “পাকিস্তান পর্যটনের বিরোধী, দরিদ্র মানুষের রুজি-রোজগারের বিরোধী। তারা চেয়েছিল দাঙ্গা লাগাতে, মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতে।”
মোদি জানান, পহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার পেছনে পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ছিল কাশ্মীরের ক্রমবর্ধমান পর্যটন খাতকে ধ্বংস করা। তিনি বলেন, “গত চার-পাঁচ বছর ধরে কাশ্মীরে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটক আসছেন, যেটির ওপর ভিত্তি করে স্থানীয় দরিদ্র জনগণ জীবিকা নির্বাহ করছে। ঘোড়াচালক, পোর্টার, গাইড ও গেস্ট হাউজ পরিচালনাকারীদের জীবিকা থামিয়ে দিতে ষড়যন্ত্র করেছে পাকিস্তান।”
এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নিহত কাশ্মিরি যুবক সৈয়দ আদিল হুসেন শাহের কথা তুলে ধরেন, যিনি পর্যটকদের ঘোড়ায় করে ঘোরানোর কাজ করতেন। মোদি বলেন, “সন্ত্রাসীদের সামনে রুখে দাঁড়ানো আদিল নিজের পরিবারের ভরণপোষণের জন্য পরিশ্রম করছিলেন। তাকেও হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।”
মোদি এদিন চন্দ্রভাগা নদীর ওপর বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতু, ‘বন্দে ভারত’ ট্রেনসহ একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন। তার সফরের দিকে নজর ছিল আন্তর্জাতিক মহলের, কারণ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনা ও ৬-৭ মে-র মধ্যবর্তী রাতে ভারতের সামরিক পদক্ষেপের এক মাস পূর্ণ হলো এদিনই।
তিনি বলেন, “কাশ্মীরের মানুষ পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যে রুখে দাঁড়িয়েছে, তা কেবল পাকিস্তান নয়, বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদী মানসিকতার বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে। এখন কাশ্মীরের যুবশক্তি ঠিক করে নিয়েছে যে তারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।”
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বারবার ভারত সরকারকে কাশ্মীর পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হলেও, মোদি নাম না করে পাল্টা জবাব দেন। তিনি বলেন, “এই সন্ত্রাসবাদীরা স্কুল পুড়িয়েছে, হাসপাতাল ধ্বংস করেছে, দুই প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছে। বাসিন্দারা স্বপ্ন দেখাও ভুলে গিয়েছিলেন। জম্মু-কাশ্মীরকে সেই অন্ধকার থেকে বের করে আনা আমাদের দায়িত্ব।”
তিনি আরও দাবি করেন, ৬ ও ৭ মে রাতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সামরিক পদক্ষেপ ছিল কার্যকর। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি মিনিটের মধ্যে ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেন মোদি। তিনি বলেন, “পাকিস্তান কল্পনাও করতে পারেনি যে ভারত শত শত কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে এমন জবাব দিতে পারে।”
সূত্র: বিবিসি বাংলা
