আগামী পাঁচ বছরে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, ২০২৫ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করতে পারে। সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পাঁচ বছরের মধ্যে যেকোনো একটি বছর অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সবচেয়ে উষ্ণ বছর হয়ে উঠতে পারে, যার সম্ভাবনা ৭০ শতাংশ। ইতোমধ্যে ২০২৪ সালকে ধরা হচ্ছে পৃথিবীর উষ্ণতম বছর হিসেবে, যেখানে গড় তাপমাত্রা ছিল ১৩.৭ ডিগ্রির ভিত্তিরেখার তুলনায় ১.৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির ভিত্তি হিসেবে ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত সময়কালে পৃথিবীর ভূত্বকের গড় তাপমাত্রাকে ধরা হয়, যেটি ছিল ১৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই সময়ের পর থেকেই শুরু হয় ব্যাপক ও অনিয়ন্ত্রিত শিল্পায়ন, যা পরিবেশবিদদের মতে পৃথিবীর উষ্ণায়নের মূল কারণ।
২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ১.৫ ডিগ্রির নিচে রাখার চেষ্টা করা হবে এবং ২ ডিগ্রি অতিক্রম করাকে অতিমাত্রায় বিপজ্জনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই লক্ষ্য পূরণে বিশ্বব্যাপী নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাস্তবে পরিস্থিতি দিন দিন আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল কো ব্যারেট বলেন, “আমরা সম্প্রতি এমন এক দশকের মধ্য দিয়ে গিয়েছি, যেখানে প্রতি বছর আগের বছরের তুলনায় গড় তাপমাত্রা বেশি ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলেই আশঙ্কা করছি আমরা।” তিনি আরও বলেন, “এই উষ্ণতা বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক অর্থনীতি, মানুষের জীবনধারা, বাস্তুতন্ত্র এবং গোটা পৃথিবীর ওপর।”
পরিবেশবিদদের মতে, যদি দীর্ঘমেয়াদে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সীমা অতিক্রম করা হয়, তাহলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। মাঝে মাঝে কোনো একটি বছর এই সীমা অতিক্রম করলেও সেটি একধরনের সতর্ক সংকেত হলেও, পরপর কয়েক বছর গড় তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া ভবিষ্যতের জন্য বড় বিপদের লক্ষণ। ডব্লিউএমও-এর এই রিপোর্ট সেই দুশ্চিন্তাকেই আরও জোরালো করল।