জাতিকে বিভক্তির ষড়যন্ত্র রুখে দিতে দেশজুড়ে নতুন কর্মসূচি দিল ‘জুলাই ঐক্য’
দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা ও জাতিকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ‘জুলাই ঐক্য’ নামে গণঅভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট ৮০টি সংগঠনের একটি সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম। শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানিয়েছে, আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে ছয়দিনব্যাপী দেশব্যাপী অনলাইন ও অফলাইন ক্যাম্পেইন, যা চলবে ৩০ মে পর্যন্ত। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী রোববার (২৫ মে) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর শাহবাগে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে জাতিকে বিভক্ত করার সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র চলছে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার সহযোগীরা এখনও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসে আছে। আমরা দেখেছি, এ অবস্থায় বিরক্ত হয়ে পদত্যাগের চিন্তা করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।”
সংগঠনটি অভিযোগ করে, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত ছিল অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কার কার্যক্রমে সহযোগিতা করা, কিন্তু তার পরিবর্তে তারা সরকারকে আক্রমণ করছে। ৫ আগস্টের পর গড়ে ওঠা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম এবং ছাত্র আন্দোলনের ছত্রভঙ্গ হওয়ার মধ্যে দিয়ে ‘জুলাই শক্তির’ ভেতরে বিভক্তি দেখা দিয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, দেশ-বিদেশে একযোগে ষড়যন্ত্র চলছে। ভারতের সহায়তায় শেখ হাসিনা দেশে রাজনৈতিক শৃঙ্খলা নষ্টের পাঁয়তারা করছেন এবং ভারতীয় এজেন্টরা জুলাই শক্তির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। সংগঠনটির অভিযোগ, ১০ মে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ঘোষণা দিয়েছিলেন যে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে ‘জুলাইয়ের বিপ্লবী ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করা হবে—এই ঘোষণার পর থেকেই ভারতপন্থি দলগুলোতে ব্যাপক তৎপরতা শুরু হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে জুলাই ঐক্য হুঁশিয়ার করে বলেছে, ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে ঘোষণাপত্র প্রকাশ না হলে তার দায়ভার পড়বে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং তাদের সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর। পাশাপাশি তারা উপদেষ্টা পরিষদে আমূল পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে বলেছে, যেসব সদস্য ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধান উপদেষ্টাকে শক্তিশালী করতেই এই পরিবর্তন জরুরি বলে মত প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
বিবৃতির শেষাংশে জুলাই ঐক্য জানায়, “জন্মভূমির স্বার্থে আমরা আবারও রক্ত দিতে প্রস্তুত। আগ্রাসন প্রতিরোধ করে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের পথচলা অব্যাহত থাকবে।”