চা রপ্তানি বাড়াতে কাজ করছে সরকার: বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন
দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে চা রপ্তানি বাড়াতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, চা শিল্পকে শুধু দেশের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ না রেখে আন্তর্জাতিক বাজারেও তুলে ধরতে হবে।
বুধবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পঞ্চম জাতীয় চা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, চা শ্রমিকরা উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি হিসাব করে বলেন, দেশে বছরে প্রায় ৯ কোটি ৩০ লাখ কেজি চা উৎপন্ন হয় এবং এর বাজার মূল্য প্রায় ৩৭০০ থেকে ৪০০০ কোটি টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে এই চায়ের মূল্য ডাবল থেকে ট্রিপল হয়, অর্থাৎ ভোক্তা পর্যায়ে খরচ দাঁড়ায় ৮ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা। তিনি মনে করেন, যদি সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা যায়, তাহলে চা শিল্পে বিরাজমান দুষ্টচক্র ভাঙা সম্ভব হবে এবং এই জাতীয় সম্পদকে রক্ষা করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, চা শিল্পে নানা শুল্ক ও কর সংক্রান্ত বিশৃঙ্খলা রয়েছে, যেগুলো বন্ধ করে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা দরকার। বাজারে পণ্যের স্থিতিশীলতা ও ন্যায়ের জন্য এটি জরুরি।
চা শিল্পে ব্যবহৃত জমির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার ওপরও গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, জমিগুলোকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বা পর্যটন শিল্পে ব্যবহারের কথাও ভাবা যেতে পারে, তবে চায়ের বাগান থেকেই সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে। উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে বিক্রি মূল্য বাড়ানোর পাশাপাশি চায়ের পণ্যে বৈচিত্র্য আনতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য দেন টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শাহ মইনুদ্দিন হাসান, বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি কামরান টি রহমান, জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৪ বিজয়ী শ্রমিক জেসমিন আক্তার এবং চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নৃপেন পাল।
চা দিবস উপলক্ষে দেশের চা শিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য আটটি ক্যাটাগরিতে জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৫ প্রদান করা হয়। সর্বোচ্চ চা উৎপাদনকারী কারখানার জন্য দুটি বিশেষ পুরস্কারও দেওয়া হয়। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বিজয়ীদের হাতে সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বেলুন উড়িয়ে চা দিবসের উদ্বোধন করেন শেখ বশিরউদ্দীন এবং পরে চা মেলায় বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।