বিদেশি চলচ্চিত্রে ১০০% শুল্ক বসাতে চাচ্ছেন ট্রাম্প, বললেন ‘জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি’
বিদেশে নির্মিত সব ধরনের চলচ্চিত্রের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর দাবি, বিভিন্ন দেশ প্রণোদনা দিয়ে মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের আকৃষ্ট করছে, যার ফলে হলিউড দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করেছেন। সোমবার (৫ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
রোববার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “অন্যান্য দেশ আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প চুরি করছে। তারা আমাদের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের টেনে নিচ্ছে। এটি কেবল ব্যবসা নয়, এটি প্রচারণা এবং জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নও বটে।” এ কারণে তিনি মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ এবং বাণিজ্য প্রতিনিধিকে অবিলম্বে বিদেশি চলচ্চিত্রে শতভাগ শুল্ক আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছেন।
তবে এই শুল্ক আদায় বা বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে, সে বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। বিষয়টি নিয়ে এখনও অস্পষ্টতা রয়েছে। ট্রাম্পের এমন ঘোষণাকে অনেকেই রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন, বিশেষ করে আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে যেখানে তিনি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ বার্তাকে আরও জোরালো করতে চাইছেন।
ট্রাম্প অভিযোগ করেন, “আমরা এখন খুব কম চলচ্চিত্র তৈরি করছি। হলিউডের ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যারা যুক্তরাষ্ট্রে সিনেমা বানাতে চায় না, তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করা উচিত।”
এই ঘোষণার ঠিক আগেই ট্রাম্প জনপ্রিয় তিনজন অভিনেতা—সিলভেস্টার স্ট্যালোন, মেল গিবসন এবং জন ভয়েটকে “বিশেষ দূত” হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন, যারা হলিউডের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করবেন। তিনি জানিয়েছেন, এই তিনজন তাঁর “চোখ ও কান” হিসেবে কাজ করবেন এবং “হলিউডের সোনালী যুগ” ফেরত আনতে সহায়তা করবেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, হলিউড সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যবসায়িক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ মহামারি, ২০২৩ সালের লেখক ও অভিনেতাদের ধর্মঘট এবং বিনোদনের নতুন মাধ্যমগুলোর উত্থান চলচ্চিত্র শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৪ সালে হলিউড স্টুডিওগুলো বিশ্বজুড়ে আয় করেছে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৭ শতাংশ কম।
বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের এই ঘোষণায় শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, এই শুল্ক বিশ্ববাজারে মার্কিন চলচ্চিত্রের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে দুর্বল করতে পারে। পাশাপাশি অন্যান্য দেশও পাল্টা শুল্ক আরোপ করতে পারে, যা বরং মার্কিন চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।