শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫| রাত ১১:৪০

গ্রিসে বাংলা নববর্ষ উদযাপন: মিলনমেলায় রূপ নিল বৈশাখী আনন্দ

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ৩০, ২০২৫ ১২:০২ অপরাহ্ণ
গ্রিসে বাংলা নববর্ষ উদযাপন: মিলনমেলায় রূপ নিল বৈশাখী আনন্দ

গ্রিসে বাংলা নববর্ষ উদযাপন: মিলনমেলায় রূপ নিল বৈশাখী আনন্দ

ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে উদযাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাস এক বর্ণিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, যা প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি ও বিদেশি অতিথিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।

দূতাবাস প্রাঙ্গণে এদিন সাজানো হয় বৈশাখী আলপনা ও ঐতিহ্যবাহী সাজসজ্জায়। নারী-পুরুষ সকলেই বৈশাখী পোশাকে অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হন। বাংলাদেশি খাবার, শাড়ি, অলংকার এবং আলপনার স্টলে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে পুরো আয়োজন। এসব স্টলে শুধুমাত্র বাংলাদেশিদেরই নয়, বিদেশি নাগরিকদেরও দেখা যায়—যারা কেউ কেউ পাঞ্জাবি ও হাতে মেহেদি পরে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে দূতাবাসের প্রথম সচিব রাবেয়া বেগম উপস্থিত সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। এরপর রাষ্ট্রদূত নাহিদা রহমান সুমনা শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। তিনি তার বক্তব্যে বৈশাখী চেতনার মধ্যে থাকা সাম্য, সম্প্রীতি ও মানবতার মূল্যবোধ তুলে ধরেন এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের বাংলাদেশ বিনির্মাণে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে সদ্য প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস-এর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রিসে নিযুক্ত কূটনীতিক, বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্য, সিটি কাউন্সেলর, গ্রিক ডিপ্লোমেটিক ম্যাগাজিনের সম্পাদক, গ্রিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকসহ অনেকে।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় নানা আয়োজন। বর্ষবরণের গান ‘এসো হে বৈশাখ’ পরিবেশন করেন দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠন ও দূতাবাস পরিবারের সদস্যরা। শিশু-কিশোরদের ফ্যাশন শো ছিল দর্শকদের জন্য এক মনোমুগ্ধকর উপস্থাপনা, যাতে অংশ নেয় আজরিন, মিম, সাব্বির, আয়ামিন, সাজিয়া, হামজা এবং রাফিফ। ছোটদের কণ্ঠে আবৃত্তি ও ঐতিহ্যবাহী পালকি পরিবেশনায় উঠে আসে গ্রামীণ বাংলার চিত্র। সংগীত পরিবেশন করেন কুররাতুল আইন শাম্মী এবং পুথি পাঠ করেন সাইফুজ্জামান, হাফিজুর রহমান ও আহমেদ শরিফ।

সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্ব ছিল গ্রিক নাগরিক কনস্টান্টিনোসের বাংলা গান পরিবেশনা। তিনি মঞ্চে উঠে টানা তিনটি বাংলা গান পরিবেশন করেন, যা দর্শকদের মধ্যে বিশেষ আনন্দ ও উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে দেয়। অনুষ্ঠান শেষে দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠনের উন্মুক্ত পরিবেশনা পুরো আয়োজনকে উৎসবমুখর পরিবেশে পরিণত করে।

উল্লেখযোগ্য যে, অনুষ্ঠানে মোট পাঁচটি স্টল প্রদর্শিত হয়, যেখানে পিঠা, ঐতিহ্যবাহী খাবার, কাপড় ও অন্যান্য পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রির ব্যবস্থা ছিল। এ আয়োজন প্রমাণ করে, প্রবাসেও বাংলা সংস্কৃতি কতটা জীবন্ত ও প্রাসঙ্গিক।

বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন অব্যাহত থাকবে বাংলা সংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষায় এবং প্রবাসীদের মাঝে মেলবন্ধন সৃষ্টির লক্ষ্যে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত