শনিবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫| রাত ৯:৪৮

কিয়েভে রাশিয়ার বড় হামলায় ‘খুশি নন’ ট্রাম্প

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ২৬, ২০২৫ ৩:০৩ অপরাহ্ণ
কিয়েভে রাশিয়ার বড় হামলায় ‘খুশি নন’ ট্রাম্প

কিয়েভে রাশিয়ার বড় হামলায় ‘খুশি নন’ ট্রাম্প

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার ব্যাপক হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ভ্লাদিমির পুতিনের এই হামলা বন্ধ করা উচিত বলে মন্তব্য করলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নতুন কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না, সে বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা দেননি তিনি।

কিয়েভে ভয়াবহ রাত
বুধবার রাতভর কিয়েভে রাশিয়ার চালানো হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অনেক।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গত বছরের জুলাইয়ের পর এটিই কিয়েভের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ আক্রমণ।

ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া
ট্রুথ সোশ্যালের এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন,
“এই হামলার কোনো প্রয়োজন ছিল না এবং সময়টাও খুবই অশুভ। ভ্লাদিমির, থামুন!”

ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে উভয় পক্ষের ওপর “অনেক চাপ” দিচ্ছেন।
এছাড়া হোয়াইট হাউসে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী ইয়োনাস গার স্তোরের পাশে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প আরও বলেন,
“আমার কোনো পক্ষের প্রতি আনুগত্য নেই, আমি শুধু জীবন রক্ষার জন্যই দায়বদ্ধ।”

শান্তি আলোচনার টানাপোড়েন
বর্তমানে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে।
এর মধ্যেই রাশিয়ার এই হামলা শান্তি প্রচেষ্টায় বড় ধাক্কা দিল বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

একদিকে ট্রাম্প দাবি করেছেন, শান্তি চুক্তির ব্যাপারে সমঝোতা প্রায় কাছাকাছি ছিল।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন আলোচনার জন্য প্রস্তুত হলেও যেকোনো যুদ্ধবিরতির আগে রাশিয়াকে হামলা বন্ধ করতে হবে।

জেলেনস্কি দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে গেছেন। তিনি বলেন,
“আমরা বিশ্বাস করি, রাশিয়ার ওপর আরও কঠোর চাপ প্রয়োগ করলে আমাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।”

ভূখণ্ড রক্ষার অঙ্গীকার
ক্রিমিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার প্রশ্নে ইউক্রেন দৃঢ় অবস্থান বজায় রেখেছে।
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করে নেয়, এবং ইউক্রেন শুরু থেকেই বলে আসছে, তারা এই ভূখণ্ড ছাড় দেবে না।
আন্তর্জাতিক আইনও বলপ্রয়োগের মাধ্যমে সীমান্ত পরিবর্তনের বিরোধিতা করে।

রাশিয়ার অবস্থান ও মস্কো বৈঠক
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, তারা কেবল সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করছে। তবে তিনি এ দাবির পক্ষে নিরপেক্ষ কোনো প্রমাণ দেননি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ রাশিয়ায় অবস্থান করছেন এবং পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে শান্তি আলোচনার অগ্রগতি জানতে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার ভূমিকা
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা জানিয়েছেন, তার দেশ শান্তি প্রতিষ্ঠায় সকল পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি ইউক্রেনের ভূখণ্ড রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ অবস্থান
নভেম্বরে ট্রাম্পের সম্ভাব্য পুনর্নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন নীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত স্পষ্ট হচ্ছে।
একদিকে ইউক্রেন তার মিত্রদের সমর্থন ধরে রাখতে মরিয়া, অন্যদিকে আফ্রিকার অনেক দেশের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ইউক্রেনের কূটনীতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং সাহায্য তহবিল প্রত্যাহার এই ভূ-রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়িয়ে তুলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের ইতি টানার জন্য এখন সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সংঘাত যত দীর্ঘায়িত হবে, মানবিক বিপর্যয় তত বাড়বে

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি