মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল, ২০২৫| সন্ধ্যা ৬:৪৭

দুপুরের ঘুম: উপকারী না ক্ষতিকর?

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ২২, ২০২৫ ৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ
দুপুরের ঘুম: উপকারী না ক্ষতিকর?

দুপুরের ঘুম: উপকারী না ক্ষতিকর?

দুপুরের অলস সময়টা যেন ঘুমিয়ে কাটানোরই অনুপম সুযোগ, বিশেষ করে দুপুরের খাবারের পর যখন শরীর ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে আসে। তবে প্রশ্ন হলো—এই সময় ঘুমানো কি শরীরের জন্য ভালো? উত্তরটা একটু জটিল: একদিকে এটি আপনার জন্য উপকারী হতে পারে, আবার ভুলভাবে ঘুমালে হতে পারে ক্ষতিকরও। সবকিছু নির্ভর করছে আপনি কখন, কীভাবে এবং কতক্ষণ ঘুমাচ্ছেন তার ওপর। সঠিকভাবে ঘুমালে এটি আপনার মস্তিষ্ককে একরকম ছোট ছুটির মতো রিচার্জ করতে পারে। তবে ভুলভাবে ঘুমালে আপনি আরও ক্লান্ত, বিভ্রান্ত হয়ে পড়তে পারেন এবং আপনার রাতের ঘুমও বিঘ্নিত হতে পারে।

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য আদর্শ দিনের ঘুমের সময় ২০ থেকে ৩০ মিনিট। এর বেশি ঘুমালে আপনি গভীর ঘুমে চলে যেতে পারেন, যার ফলে ঘুম থেকে উঠে ভারী ও অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে। একটি সংক্ষিপ্ত ঘুম আপনার মনোযোগ বাড়াতে পারে, মেজাজ উন্নত করতে পারে এবং পরবর্তী সময়টা আরও উৎপাদনশীলভাবে কাটাতে সাহায্য করতে পারে। এটি পুরো রাতের ঘুমের বিকল্প নয় বরং একটি দ্রুত মানসিক সতেজতা। তাই ঘুমাতে গেলে অ্যালার্ম দিয়ে রাখুন এবং এমন কোনো শান্ত জায়গায় ঘুমান যেখানে আপনি পুরোপুরি গভীর ঘুমে না চলে যান।

ঘুমানোর সময়ও গুরুত্বপূর্ণ। বিকাল ৪টার পর ঘুমানো আপনার শরীরের স্বাভাবিক ঘুম-জাগরণ চক্রের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে, যার ফলে রাতে ঘুমানো কঠিন হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে যারা ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য এটি আরও জটিল হতে পারে। দিনের বেলার ঘুমের জন্য সবচেয়ে উপযোগী সময় হলো দুপুর ১টা থেকে ৩টার মধ্যে, যখন স্বাভাবিকভাবেই আমাদের শক্তি কমে আসে। এই সময় ঘুমালে রাতের ঘুম নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও কম।

যদি আপনি আগের রাতে কম ঘুমিয়ে থাকেন, তাহলে দিনের বেলা একটি ঘুম সেই ঘাটতি কিছুটা পুষিয়ে দিতে পারে। যদিও এটি সম্পূর্ণ ঘুমের ঘাটতি পূরণ করতে পারবে না, তবে এটি আপনার মনোযোগ বৃদ্ধি করতে, বিরক্তি কমাতে এবং শরীরকে কিছুটা সময় দিতে সাহায্য করবে পুনরুদ্ধারের জন্য।

তবে প্রতিদিন যদি ঘুমানোর প্রয়োজন পড়ে, তাহলে এটি কোনো অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যা নির্দেশ করতে পারে। যেমন—ঘুমের সমস্যা, মানসিক চাপ, শরীরে আয়রনের ঘাটতি, কিংবা কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তির কারণ হতে পারে। সুতরাং, আপনি যদি নিয়মিত ঘুমানোর পরও ক্লান্ত বোধ করেন, তাহলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

দুপুরের খাবারের পরপরই ঘুমানোও বিপজ্জনক হতে পারে। বিশেষ করে ভারী খাবার খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমালে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। খাবার খাওয়ার পর অন্তত ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন, হালকা হাঁটাহাঁটি করুন—এরপর যদি শরীর ঘুমের জন্য প্রস্তুত থাকে, তখন ঘুমিয়ে নিন।

সুতরাং, দিনের বেলা ঘুমানো ভালো কি না, সেটি নির্ভর করছে আপনি কীভাবে এটি গ্রহণ করছেন তার ওপর। সঠিকভাবে ঘুমালে এটি হতে পারে আপনার দিনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলার এক চমৎকার উপায়।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি