রবিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৫| রাত ১০:২৪

আন্দোলনের প্রয়োজন নেই, সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে: নজরুল ইসলাম

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ২০, ২০২৫ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ
আন্দোলনের প্রয়োজন নেই, সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে: নজরুল ইসলাম

আন্দোলনের প্রয়োজন নেই, সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে: নজরুল ইসলাম

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি মনে করেন, এই সরকারকে জনগণের সমর্থনে ক্ষমতায় আনা হয়েছে এই প্রত্যাশায় যে, তারা দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে শরিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

শরিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক
শনিবার বিকেলে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং সেলিমা রহমান গুলশানে দুটি পৃথক বৈঠকে অংশ নেন। প্রথম বৈঠকটি ছিল ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে, এবং দ্বিতীয়টি লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে। এই বৈঠকগুলোর উদ্দেশ্য ছিল সরকারের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা এবং জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সরকারকে দিকনির্দেশনা দেওয়া।

বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আমরা মনে করি না যে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার প্রয়োজন আছে। আমরা চাই, সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করুক। এজন্য আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমাদের মতামত তুলে ধরছি। আমরা আশা করি, সরকার আমাদের এই মতামত শুনবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে।”

সরকারের প্রতি আস্থা ও প্রত্যাশা
নজরুল ইসলাম খান জোর দিয়ে বলেন, বর্তমান সরকারকে জনগণের সমর্থন ও প্রত্যাশার ভিত্তিতে ক্ষমতায় আনা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরাই এই সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছি, এই প্রত্যাশায় যে তারা দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন করবে। আমরা আশা করি, তারা জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী কাজ করবে।”

তিনি আরও বলেন, বিএনপি এবং তাদের শরিক দলগুলো সরকারের কাছে তাদের প্রত্যাশা ও পরামর্শ তুলে ধরছে, যাতে সরকার সঠিক পথে এগোতে পারে। তবে, তিনি এও স্পষ্ট করেন যে, সরকার যদি জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিএনপি এবং তাদের শরিক দলগুলো সরকারের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তারা মনে করে, এই সরকারকে গণতান্ত্রিক সংস্কার, নির্বাচনী ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমে মনোযোগ দিতে হবে। বিএনপি এবং তাদের শরিকরা সরকারের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জনের পক্ষে কাজ করছে, এবং আপাতত তারা আন্দোলনের পরিবর্তে কূটনৈতিক ও গঠনমূলক পন্থা অবলম্বন করছে।

নজরুল ইসলাম খানের এই মন্তব্য বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক কৌশলের প্রতিফলন। দলটি মনে করে, সরকারকে সময় দেওয়া উচিত, যাতে তারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করতে পারে। তবে, দলের নেতৃত্ব স্পষ্ট করেছে যে, তারা সরকারের কার্যক্রমের ওপর নজর রাখবে এবং প্রয়োজনে জনগণের পক্ষে তাদের অবস্থান জানাতে পিছপা হবে না।

বৈঠকের তাৎপর্য
শনিবারের বৈঠকগুলো বিএনপি এবং তাদের শরিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য ও সমন্বয় বজায় রাখার প্রচেষ্টার অংশ। ১২ দলীয় জোট এবং এলডিপির সঙ্গে এই আলোচনার মাধ্যমে বিএনপি তাদের রাজনৈতিক জোটকে আরও শক্তিশালী করতে চায়। বৈঠকে সরকারের সাম্প্রতিক কার্যক্রম, গণতান্ত্রিক সংস্কারের অগ্রগতি এবং আগামী দিনে জোটের কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

বিএনপির নেতারা মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের সঙ্গে সংলাপ ও পরামর্শের মাধ্যমে জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা সম্ভব। তবে, তারা এও জানিয়েছেন যে, সরকার যদি জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
নজরুল ইসলাম খানের এই বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। বিএনপি এবং তাদের শরিক দলগুলো বর্তমানে আন্দোলনের পরিবর্তে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে। তবে, এই অবস্থান সরকারের কার্যক্রম এবং জনগণের প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করবে।

বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে বর্তমান সরকার কতটা সফল হবে, তা আগামী দিনে দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিএনপির এই গঠনমূলক অবস্থান জনগণের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করলেও, সরকারের কার্যক্রমের ফলাফলই শেষ পর্যন্ত এই সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।

সূত্র: ঢাকা পোস্ট

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি