শুক্রবার, ৬ই জুন, ২০২৫| রাত ১০:২৮

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আহমাদ বাদাবির মৃত্যু

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ১৫, ২০২৫ ৮:৫৯ অপরাহ্ণ
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আহমাদ বাদাবির মৃত্যু

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আহমাদ বাদাবির মৃত্যু

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আহমাদ বাদাবি আর নেই। ৮৫ বছর বয়সে সোমবার (১৪ এপ্রিল) তিনি কুয়ালালামপুরের জাতীয় হার্ট ইনস্টিটিউটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার পরিবার এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।

জাতীয় হার্ট ইনস্টিটিউটের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রোববার (১৩ এপ্রিল) শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে আব্দুল্লাহ হাসপাতালে ভর্তি হন। তার শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতি হওয়ায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের সব ধরনের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে তিনি শান্তিতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তার পরিবারের সদস্যরা এবং ঘনিষ্ঠজনরা তার পাশে ছিলেন।

আব্দুল্লাহর জামাতা এবং মালয়েশিয়ার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী খাইরি জামালউদ্দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টের মাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। তবে তিনি মৃত্যুর নির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করেননি।

আব্দুল্লাহ আহমাদ বাদাবি ২০০৩ সালে মালয়েশিয়ার পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার আগে দেশটির আধুনিক রূপকার হিসেবে পরিচিত প্রবীণ রাজনীতিক মাহাথির মোহাম্মদ ২২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগ করেন। আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে মালয়েশিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়।

ক্ষমতায় থাকাকালীন আব্দুল্লাহ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন এবং দেশব্যাপী ব্যাপক অভিযান শুরু করেন। তিনি মধ্যপন্থী ইসলামের সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়েশিয়ায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে বিশেষ জোর দেন। তার শাসনামলে ‘ইসলাম হাদারি’ নামে একটি দর্শন প্রচার করা হয়, যা আধুনিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দেয়।

তবে তার আমলে জ্বালানি ভর্তুকি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত দেশে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। এই নীতির কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়, যা জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন জোট বারিশান ন্যাশনাল (বিএন) সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়, যা মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালে আব্দুল্লাহ পদত্যাগ করেন, এবং তার স্থলাভিষিক্ত হন নাজিব রাজাক।

আব্দুল্লাহর মৃত্যুতে মালয়েশিয়া একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হারালো। তার শান্ত ও সৌম্য ব্যক্তিত্ব তাকে জনগণের কাছে ‘পাক লাহ’ নামে জনপ্রিয় করে তুলেছিল। তিনি দেশের উন্নয়নে তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করেছেন, যদিও তার শাসনামল বিতর্ক মুক্ত ছিল না।

মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনীতিকরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। অনেকে তার সততা, ধর্মীয় সহনশীলতা এবং জনগণের প্রতি তার সহানুভূতিশীল মনোভাবের প্রশংসা করছেন।

জাতীয় হার্ট ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, আব্দুল্লাহর শেষকৃত্যের বিষয়ে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মালয়েশিয়ার সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেনি, তবে শিগগিরই জাতীয় শোক ঘোষণা করা হতে পারে।

আব্দুল্লাহ আহমাদ বাদাবির মৃত্যু মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে একটি যুগের অবসান ঘটালো। তার অবদান দেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

সূত্র: রয়টার্স

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত
অরিজিৎ সিংয়ের প্রশংসায় সিক্ত ‘যদি আবার’ গানটি

অরিজিৎ সিংয়ের প্রশংসায় সিক্ত ‘যদি আবার’ গানটি

আজকের নামাজের সময়সূচি (২১ ডিসেম্বর, ২০২৪)

অর্থনীতির সংকট কাটিয়ে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট: বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ গত বছরের জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার এক বছর পূর্ণ করতে চললেও দেশের অর্থনীতি এখনও স্থবিরতার মধ্যেই রয়েছে। মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগে স্থবিরতা, কর্মসংস্থান সংকট, রফতানি হ্রাস ও রাজস্ব ঘাটতির মতো বহু সমস্যা সামনে রেখে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। বাজেট প্রস্তুতের আগে অর্থ মন্ত্রণালয় যে আটটি প্রধান চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে, তার মধ্যে রয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা, সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন এবং এলডিসি উত্তরণে প্রস্তুতি। অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। একইসঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে উপকারভোগীর সংখ্যা ও ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনাও থাকছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছে, তা সামাল দিতে কেবল সামাজিক সুরক্ষা বাড়ানোই যথেষ্ট নয়। নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ না থাকায় দেশের শিল্প খাতেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানিতে এলসি খোলার হার ৩০ শতাংশ কমেছে। শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ নেমে এসেছে ৪৮.৪১ শতাংশে এবং দেশে বর্তমানে বেকার সংখ্যা ২৭ লাখ ৩০ হাজার, যা এক বছরে বেড়েছে সোয়া তিন লাখ। বিদেশে কর্মী পাঠানোর হারও ২২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে আশার কথা হলো—রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে এবং মার্চ ও এপ্রিল মাসে তা রেকর্ড পরিমাণে পৌঁছেছে। এদিকে বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্য ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এনবিআর মাত্র ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে পেরেছে, ফলে প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সরকার নতুন খাতে কর আরোপ এবং কর ব্যবস্থার অটোমেশন চালুর মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর চেষ্টা করছে। সরকারি ঋণের পরিমাণ এরইমধ্যে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। নতুন বাজেট বাস্তবায়নে আরও ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যার মধ্যে সুদ পরিশোধেই ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। তবে ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা কিছুটা কমিয়ে বাজেট ঘাটতি সীমিত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, উচ্চাভিলাষী এই বাজেট বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা। বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেনের মতে, বাজেটের আকার আরও ছোট ও বাস্তবসম্মত হলে তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হতো। সিপিডির মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, বাজেটের মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা এবং বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বৈদেশিক বাণিজ্যেও নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক, ভারতের পণ্যে নিষেধাজ্ঞা এবং বৈশ্বিক বাজারের অস্থিরতায় রফতানি কমেছে। আখাউড়া স্থলবন্দরের মতো সীমান্ত বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পথগুলোর কার্যকারিতা কমে গেছে। এছাড়া, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং চাঁদাবাজি ও সাইবার হুমকির কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমন অবস্থায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বিনিয়োগ সুরক্ষায় ‘ফাস্ট-ট্র্যাক অভিযোগ নিষ্পত্তি’ এবং ‘ই-কমার্স নিরাপত্তা ইউনিট’ গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। এই সব বাস্তবতায় সরকারের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ তৈরি ও তার কার্যকর বাস্তবায়ন, যার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে গতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

অর্থনীতির সংকট কাটিয়ে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট: বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ

গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন, প্রশাসনিক ভবনে তালা

গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন, প্রশাসনিক ভবনে তালা

আখেরি মোনাজাতে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব

আখেরি মোনাজাতে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব

কমল হাসানের ‘থাগ লাইফ’ কর্নাটকে মুক্তি পাচ্ছে না, ক্ষমা চাইতে নারাজ অভিনেতা

কমল হাসানের ‘থাগ লাইফ’ কর্নাটকে মুক্তি পাচ্ছে না, ক্ষমা চাইতে নারাজ অভিনেতা

আজকের নামাজের সময়সূচি (৬ জুন, ২০২৫)

আজকের নামাজের সময়সূচি (৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫)

গাজার ধ্বংসস্তূপে আরও ৬ লাশ, রাফায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২

সারাদেশে প্রায় ৮০০ আয়নাঘর আছে: প্রধান উপদেষ্টা

সারাদেশে প্রায় ৮০০ আয়নাঘর আছে: প্রধান উপদেষ্টা

কাশ্মিরে আকাশযুদ্ধে ভারতের রাফাল ভূপাতিত, দাসোর শেয়ারদরে ধস

কাশ্মিরে আকাশযুদ্ধে ভারতের রাফাল ভূপাতিত, দাসোর শেয়ারদরে ধস