বুধবার, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৫| বিকাল ৩:১৭

টিউলিপের ‘অভিনব জালিয়াতির’ প্রমাণ পেয়েছে দুদক

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ১১, ২০২৫ ৭:৫৬ অপরাহ্ণ
টিউলিপের ‘অভিনব জালিয়াতির’ প্রমাণ পেয়েছে দুদক

টিউলিপের ‘অভিনব জালিয়াতির’ প্রমাণ পেয়েছে দুদক

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানিয়েছে, তারা ব্রিটেনের সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ‘অভিনব জালিয়াতির’ প্রমাণ পেয়েছে। অভিযোগ, তিনি সরকারি জমি হস্তান্তরের বিনিময়ে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের কাছ থেকে একটি ফ্ল্যাট উপহার হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এই ঘটনায় দুদক আগামী সপ্তাহে টিউলিপ এবং রাজউকের একজন সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে, গুলশান-২-এর ৭১ নম্বর রোডে অবস্থিত একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের মালিক টিউলিপ সিদ্দিক। গত মার্চে দুদক এই ফ্ল্যাটের সন্ধান পায় এবং আদালতের নির্দেশে সেটি জব্দ করা হয়। তবে, ফ্ল্যাটের পেছনের ঘটনা খতিয়ে দেখতে গিয়ে দুদক আবিষ্কার করে এক জটিল জালিয়াতির নেটওয়ার্ক। তদন্তে দেখা যায়, ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক প্রধান বিচারপতি ইমাম হোসেন চৌধুরী ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের (বর্তমানে রাজউক) কাছ থেকে প্রায় দুই বিঘা জমি ৯৯ বছরের লিজে পান, তবে শর্ত ছিল এটি হস্তান্তর করা যাবে না। কিন্তু ১৯৭৪ সালে বিভিন্ন হাত ঘুরে এই জমি ইস্টার্ন হাউজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের কাছে চলে যায়।

দুদকের তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ২০০০ সালে টিউলিপ সিদ্দিকের খালা ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রভাব খাটিয়ে ইস্টার্ন হাউজিং এই জমিতে বাণিজ্যিক প্রকল্পের অনুমোদন পায়। নিয়ম ভেঙে জমিটি ‘লিগ্যাল পার্সন’ হিসেবে আমমোক্তারের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয় এবং এটিকে ৩৬টি ফ্ল্যাটে বিভক্ত করার অনুমোদন দেওয়া হয়। বিনিময়ে টিউলিপ সিদ্দিককে ওই প্লটের ২০১ নম্বর ফ্ল্যাটটি দেওয়া হয়। দুদকের দাবি, এই পুরো প্রক্রিয়া ছিল অবৈধ এবং জালিয়াতিপূর্ণ।

এই ঘটনায় দুদক টিউলিপ সিদ্দিক এবং রাজউকের সাবেক কর্মকর্তা সরদার মোশাররফ হোসেনকে আসামি করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম এবং রাজউকের আরেক সাবেক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ সেলিম মারা গেছেন বলে তাদের আসামি করা সম্ভব হচ্ছে না।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন বলেন, “রাজউকের বরাদ্দকৃত প্লট বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। এই ধরনের অনিয়মে জড়িত কোনো বিভাগ দায় এড়াতে পারে না।” তিনি আরও জানান, এই ধরনের জমি হস্তান্তর সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত।

এর আগে, পূর্বাচলে শেখ পরিবারের ৬০ কাঠা জমির জালিয়াতি মামলায় টিউলিপ সিদ্দিককে হুকুমের আসামি করেছিল দুদক। এই নতুন ঘটনা তাকে আরও আইনি জটিলতার মুখে ফেলেছে। দুদকের তদন্ত এবং আসন্ন মামলা এই কেলেঙ্কারির পূর্ণাঙ্গ চিত্র সামনে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি