চীনে নার্সিং হোমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, নিহত ২০
চীনের উত্তরাঞ্চলীয় হেবেই প্রদেশের চেংদে শহরে একটি নার্সিং হোমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে শোকের ছায়া ফেলেছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্স বুধবার (৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায়, মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) স্থানীয় সময় রাত ৯টায় এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, যা নার্সিং হোমের বাসিন্দাদের জন্য মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে সিনহুয়া বলছে, আগুন লাগার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এই ঘটনা সবাইকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
নার্সিং হোমে থাকা বয়স্ক মানুষদের জন্য এই দুর্ঘটনা আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আগুনের ধোঁয়ায় চারপাশ অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। চিৎকার শুনেছি, কিন্তু কিছু করার ছিল না।” ২০ জনের মৃত্যুর এই খবর স্থানীয়দের হৃদয় ভেঙে দিয়েছে।
আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। সিনহুয়া জানায়, নার্সিং হোমের বাকি বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নিকটবর্তী হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণ চলছে। তবে ঠিক কতজনকে সরানো হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
ঘটনার কারণ খুঁজতে বিশেষজ্ঞদের একটি দল নার্সিং হোমে পৌঁছেছে। সিনহুয়া জানায়, তারা আগুনের উৎস আর কীভাবে এত দ্রুত ছড়িয়েছে, তা তদন্ত করছেন। একজন স্থানীয় বলেন, “এটা জানা দরকার। এমন ঘটনা যেন আর না হয়।” তদন্তের ফলাফলের জন্য সবাই অপেক্ষায়।
চেংদে শহরে এমন দুর্ঘটনা স্থানীয়দের জন্য অপ্রত্যাশিত। একজন বাসিন্দা বলেন, “এখানে এমন কিছু কখনো ভাবিনি। আমরা শোকে মুহ্যমান।” নার্সিং হোমটি বয়স্কদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় ছিল। কিন্তু এই আগুনে সব স্বপ্ন ছাই হয়ে গেছে।
অগ্নিকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোকের বন্যা বয়ে গেছে। একজন লিখেছেন, “এটা ভয়ংকর। যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারের জন্য দুঃখ হয়।” আরেকজন বলেন, “নিরাপত্তা নিয়ে আরও সতর্ক হওয়া উচিত।”
চীনে এর আগেও এমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে এবারের ক্ষয়ক্ষতি অনেকের মনে গভীর রেখাপাত করেছে। স্থানীয় প্রশাসন জানায়, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। কিন্তু প্রাণহানির ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব নয়।
তদন্তে কী বেরিয়ে আসে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। আগুনের কারণ যদি বৈদ্যুতিক ত্রুটি বা অবহেলা হয়, তবে নিরাপত্তা বিধি আরও কঠোর করার দাবি উঠবে। একজন হাসপাতাল কর্মী বলেন, “যারা বেঁচে আছেন, তাদের অবস্থা ভালো নয়। আমরা চেষ্টা করছি।”