শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| সকাল ৬:১৫

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ৮, ২০২৫ ৬:৫৭ অপরাহ্ণ

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত নিনা পি. কেইনগ্লেট। এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি সোমবার (৭ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হয়। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করার লক্ষ্যে এই সাক্ষাৎ অনেকের কাছেই আশার আলো জাগিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, এই বৈঠকে ড. ইউনূস ও রাষ্ট্রদূত নিনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তাদের কথাবার্তার কেন্দ্রে ছিল বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ। এছাড়া বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বাড়াতে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের সম্ভাবনাও উঠে এসেছে।

বৈঠকে দুই নেতা কৃষি ও শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার ওপর জোর দেন। ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের দুই দেশের মধ্যে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষিতে ফিলিপাইনের অভিজ্ঞতা আর বাংলাদেশের সম্পদ একত্রিত হলে দুই পক্ষই লাভবান হবে।” শিক্ষার ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থী বিনিময় আর গবেষণায় সহযোগিতার বিষয়টি আলোচনায় আসে।

রাষ্ট্রদূত নিনা পি. কেইনগ্লেট এই সাক্ষাতে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট বংবং মার্কোস ও তার দেশের জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বকে মূল্য দিই। এই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” তার এই বক্তব্যে দুই দেশের মধ্যে একটি উষ্ণ সম্পর্কের ছবি ফুটে ওঠে।

আলোচনায় বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়টি ছিল অন্যতম আকর্ষণ। ফিলিপাইন থেকে বাংলাদেশে কৃষিপণ্য আমদানি আর বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানির সম্ভাবনা নিয়ে কথা হয়। একজন কর্মকর্তা বলেন, “এই সহযোগিতা আমাদের অর্থনীতিকে নতুন গতি দেবে।” ড. ইউনূসও এই বিষয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, “ব্যবসা-বাণিজ্য আমাদের সম্পর্কের ভিত মজবুত করবে।”

বৈঠকে দুই পক্ষই ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন। নিনা বলেন, “আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আরও কাছাকাছি আসতে চাই। আমাদের জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ও বাড়ানো দরকার।” ড. ইউনূস সম্মতি জানিয়ে বলেন, “এই সম্পর্ক শুধু অর্থনীতির জন্য নয়, আমাদের মানুষের জন্যও।”

এই সাক্ষাৎ বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন দিগন্ত খুলতে পারে। ফিলিপাইনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ। এই বৈঠক তাকে আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছে। একজন বিশ্লেষক বলেন, “ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেকে শক্তিশালী করছে।”

রাষ্ট্রদূত নিনা বাংলাদেশের প্রতি ফিলিপাইনের সমর্থনের কথা পুনরায় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আপনাদের অন্তর্বর্তী সরকারের পাশে আমরা আছি। আমরা একসঙ্গে অনেক কিছু অর্জন করতে পারি।” এই আশ্বাসে বাংলাদেশের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা এসেছে।

বৈঠকের পর দুই নেতাই আশাবাদী যে, এই আলোচনা দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে। ড. ইউনূস বলেন, “আমরা একে অপরের শক্তি ব্যবহার করে এগিয়ে যেতে চাই।” স্থানীয় একজন বলেন, “এই ধরনের সম্পর্ক আমাদের অর্থনীতি আর জীবনযাত্রার জন্য ভালো।”

এই সাক্ষাৎ থেকে কৃষি, শিক্ষা আর বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি