মঙ্গলবার, ৩রা জুন, ২০২৫| রাত ৯:২৫

বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের ওপর সাময়িক ভিসা নিষেধাজ্ঞা সৌদির

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ৬, ২০২৫ ৪:২৮ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের ওপর সাময়িক ভিসা নিষেধাজ্ঞা সৌদির

বাংলাদেশসহ ১৩ দেশের ওপর সাময়িক ভিসা নিষেধাজ্ঞা সৌদির

পবিত্র হজ মৌসুম ঘনিয়ে আসছে। আর এই সময়ে নিরাপত্তা জোরদার ও বাড়তি ভিড় এড়াতে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ ১৩টি দেশের নাগরিকদের জন্য ওমরাহ, ব্যবসা ও পারিবারিক ভিসার ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটি। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে হজের সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় সৌদি কর্তৃপক্ষ।

সূত্রের খবর, এই নিষেধাজ্ঞা শুধু ওমরাহ, ব্যবসা আর পারিবারিক ভিসার ক্ষেত্রে কার্যকর হবে। তবে ওয়ার্ক ভিসার ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে না। জানা গেছে, এই নিষেধাজ্ঞা জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে পারে। জিয়ো নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্তের পেছনে হজের সময় অতিরিক্ত ভিড় আর নিরাপত্তার বিষয়টি মূল কারণ।

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, যারা ওমরাহ ভিসা নিয়ে এখনো সৌদি আরবে আছেন, তারা ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় যেসব দেশ পড়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, নাইজেরিয়া, জর্ডান, আলজেরিয়া, সুদান, ইথিওপিয়া, তিউনিসিয়া আর ইয়েমেন। তবে এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কেউ যদি সৌদি আরবে ঢোকার চেষ্টা করেন বা থেকে যান, তাদের জন্য কঠোর শাস্তি অপেক্ষা করছে। সূত্র বলছে, এমন ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের জন্য সৌদিতে প্রবেশ ও অবস্থানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।

সৌদি সরকার ইতোমধ্যে পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে। পাকিস্তানি ওমরাহ ভিসাধারীদের ২৯ এপ্রিলের মধ্যে দেশে ফিরে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলোর ক্ষেত্রেও একই ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সৌদি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অনেক ভ্রমণকারী দীর্ঘমেয়াদি ভিসায় প্রবেশ করে অনুমতি ছাড়াই হজ করার চেষ্টা করেন। আবার কেউ কেউ অবৈধভাবে থেকে যান। এতে হজের সময় তীব্র ভিড় আর নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি হয়। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই এই সিদ্ধান্ত।

একজন কূটনৈতিক সূত্র বলেন, “হজের সময় লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে মক্কায় সমবেত হন। এটি বড় চ্যালেঞ্জ। অনেকে ভিসার শর্ত ভঙ্গ করে হজে যোগ দেন। ফলে বৈধ হজযাত্রীদের সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এই নিষেধাজ্ঞা সেই সমস্যা সমাধানের একটি উপায়।” সৌদি আরবের এই পদক্ষেপকে অনেকে নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার দিক থেকে যৌক্তিক বলছেন।

বাংলাদেশের অনেকেই প্রতি বছর ওমরাহ করতে সৌদি আরব যান। হজের সময় এই সংখ্যা আরও বাড়ে। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেকের পরিকল্পনায় ভাটা পড়তে পারে। একজন সম্ভাব্য ওমরাহযাত্রী বলেন, “আমরা পরিবার নিয়ে ওমরাহ করতে যাওয়ার কথা ভাবছিলাম। কিন্তু এখন সব অনিশ্চিত।”

সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা অস্থায়ী। হজ মৌসুম শেষ হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে যারা এখন সৌদিতে আছেন, তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফিরে আসতে হবে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে ২৯ এপ্রিলের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের জন্যও অনুরূপ নির্দেশনা আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে আরেকটি কারণ হলো অবৈধ অভিবাসন রোধ। অনেকে ওমরাহ বা অন্য ভিসায় গিয়ে সৌদিতে থেকে যান। এটি দেশটির জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন বিশ্লেষক বলেন, “সৌদি আরব হজকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে চায়। এই নিষেধাজ্ঞা তাদের সেই লক্ষ্যের অংশ।”

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সৌদি দূতাবাস শিগগিরই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবে। এদিকে, যারা ওমরাহ বা ব্যবসার জন্য সৌদি যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন, তারা এখন উদ্বিগ্ন।

হজের সময় সৌদি আরবের এমন কঠোর পদক্ষেপ নতুন নয়। প্রতি বছরই তারা ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন নিয়ম জারি করে। তবে এবার ১৩টি দেশের ওপর একযোগে নিষেধাজ্ঞা এসেছে, যা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত
আজকের আবহাওয়া (২ জানুয়ারি, ২০২৫)

আজকের আবহাওয়া (২৬ নভেম্বর, ২০২৪)

হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় চরিত্র নিয়ে নুহাশের ‘ওরা তিনজন’

হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় চরিত্র নিয়ে নুহাশের ‘ওরা তিনজন’

আজকের মুদ্রার হার (২ জুন, ২০২৫)

আজকের মুদ্রার হার (২ মে, ২০২৫)

চীনা পণ্যে সর্বোচ্চ ২৪৫% শুল্ক আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র, বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্রতর

চীনা পণ্যে সর্বোচ্চ ২৪৫% শুল্ক আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র, বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্রতর

ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশনিংয়ের নিয়ম শিথিল করল বাংলাদেশ ব্যাংক

অর্থনীতির সংকট কাটিয়ে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট: বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ গত বছরের জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার এক বছর পূর্ণ করতে চললেও দেশের অর্থনীতি এখনও স্থবিরতার মধ্যেই রয়েছে। মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগে স্থবিরতা, কর্মসংস্থান সংকট, রফতানি হ্রাস ও রাজস্ব ঘাটতির মতো বহু সমস্যা সামনে রেখে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। বাজেট প্রস্তুতের আগে অর্থ মন্ত্রণালয় যে আটটি প্রধান চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে, তার মধ্যে রয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা, সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন এবং এলডিসি উত্তরণে প্রস্তুতি। অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। একইসঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে উপকারভোগীর সংখ্যা ও ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনাও থাকছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছে, তা সামাল দিতে কেবল সামাজিক সুরক্ষা বাড়ানোই যথেষ্ট নয়। নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ না থাকায় দেশের শিল্প খাতেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানিতে এলসি খোলার হার ৩০ শতাংশ কমেছে। শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ নেমে এসেছে ৪৮.৪১ শতাংশে এবং দেশে বর্তমানে বেকার সংখ্যা ২৭ লাখ ৩০ হাজার, যা এক বছরে বেড়েছে সোয়া তিন লাখ। বিদেশে কর্মী পাঠানোর হারও ২২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে আশার কথা হলো—রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে এবং মার্চ ও এপ্রিল মাসে তা রেকর্ড পরিমাণে পৌঁছেছে। এদিকে বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্য ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এনবিআর মাত্র ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে পেরেছে, ফলে প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সরকার নতুন খাতে কর আরোপ এবং কর ব্যবস্থার অটোমেশন চালুর মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর চেষ্টা করছে। সরকারি ঋণের পরিমাণ এরইমধ্যে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। নতুন বাজেট বাস্তবায়নে আরও ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যার মধ্যে সুদ পরিশোধেই ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। তবে ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা কিছুটা কমিয়ে বাজেট ঘাটতি সীমিত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, উচ্চাভিলাষী এই বাজেট বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা। বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেনের মতে, বাজেটের আকার আরও ছোট ও বাস্তবসম্মত হলে তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হতো। সিপিডির মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, বাজেটের মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা এবং বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে অগ্রাধিকার দিতে হবে। বৈদেশিক বাণিজ্যেও নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক, ভারতের পণ্যে নিষেধাজ্ঞা এবং বৈশ্বিক বাজারের অস্থিরতায় রফতানি কমেছে। আখাউড়া স্থলবন্দরের মতো সীমান্ত বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পথগুলোর কার্যকারিতা কমে গেছে। এছাড়া, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং চাঁদাবাজি ও সাইবার হুমকির কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমন অবস্থায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বিনিয়োগ সুরক্ষায় ‘ফাস্ট-ট্র্যাক অভিযোগ নিষ্পত্তি’ এবং ‘ই-কমার্স নিরাপত্তা ইউনিট’ গঠনের আহ্বান জানিয়েছে। এই সব বাস্তবতায় সরকারের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ তৈরি ও তার কার্যকর বাস্তবায়ন, যার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে গতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

অর্থনীতির সংকট কাটিয়ে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট: বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ

টিপকাণ্ডে ১৮ জনের বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত নাজমুল তারেকের মামলা

টিপকাণ্ডে ১৮ জনের বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত নাজমুল তারেকের মামলা

মোংলা বন্দরে ধারণ করা এবারের ইত্যাদিতে যা থাকছে

মার্কিন আদালতের আদেশে কাজে ফিরছেন ইউএসএআইডির ২৭০০ কর্মী

ক্রোম এক্সটেনশনের মাধ্যমে সাইবার হুমকি, সতর্ক থাকার পরামর্শ

ক্রোম এক্সটেনশনের মাধ্যমে সাইবার হুমকি, সতর্ক থাকার পরামর্শ