শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| সন্ধ্যা ৭:২০

মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলো রাশিয়া

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ২, ২০২৫ ৪:২৭ অপরাহ্ণ
মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলো রাশিয়া

মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলো রাশিয়া

ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান সংঘাতে যুদ্ধবিরতির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে প্রস্তাব পেশ করেছিল, তা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে রাশিয়া। এই খবর নিশ্চিত করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। তিনি জানিয়েছেন, বর্তমান আকারে এই প্রস্তাব মস্কোর কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ডয়চে ভেলের বরাতে এই তথ্য সামনে এসেছে।

রাশিয়ার একটি আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রিয়াবকভ খোলাখুলি বলেছেন, “আমরা মার্কিন প্রস্তাবটি খুঁটিনাটি পর্যালোচনা করেছি। কিন্তু এতে রাশিয়ার মূল উদ্বেগগুলোর কোনো প্রতিফলন নেই। যে কারণগুলো এই যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটিয়েছে, সেগুলোকে পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে।” তার এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, রাশিয়া তাদের অবস্থানে অনড় রয়েছে।

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, “যদি রাশিয়া এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ না করে, তাহলে আমরা মস্কোর তেল শিল্পের ওপর আরও কঠিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করব।” ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও রাশিয়ার অবস্থানে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি।

এদিকে, ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে ইউরোপীয় কমিশন। তারা ইউক্রেনকে ৩৫০ কোটি ইউরোর একটি বড় সহায়তা প্যাকেজ দিয়েছে। এর মধ্যে ৩১০ কোটি ইউরো সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে এবং ৪০ কোটি ইউরো অনুদান হিসেবে দেওয়া হয়েছে। এই সহায়তা ইইউ-এর ‘ইউক্রেন ফ্যাসিলিটি প্রোগ্রাম’র অংশ। এই প্রোগ্রামের আওতায় ২০২৭ সাল পর্যন্ত ইউক্রেনকে মোট ৫,০০০ কোটি ইউরো সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কিয়েভ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত তারা ১,৬০০ কোটি ইউরো পেয়েছে, যা তারা রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতে ব্যবহার করবে।

অন্যদিকে, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো মস্কোর ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে। সুইজারল্যান্ড, যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য নয়, তবুও ইইউ-এর নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে পুরোপুরি একাত্মতা প্রকাশ করেছে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ৩১ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত সুইজারল্যান্ড রাশিয়ার ৮৪০ কোটি ডলারের সম্পদ ফ্রিজ করেছে। গত এক বছরে নতুন করে আরও ১৮০ কোটি ডলারের সম্পদ চিহ্নিত করে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই সম্পদের মধ্যে রয়েছে বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেট, দামি গাড়ি এবং মূল্যবান শিল্পকর্ম।

বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা এবং অর্থনৈতিক চাপ রাশিয়ার ওপর বাড়তি প্রভাব ফেলছে। তবে এটি যুদ্ধবিরতির বিষয়ে মস্কোর অবস্থান কতটা বদলাতে পারবে, তা নিয়ে এখনও সন্দেহ রয়েছে। রাশিয়া বারবার বলে আসছে, তাদের ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ ইউক্রেনে তাদের নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষার জন্য অপরিহার্য। অন্যদিকে, ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা এটিকে আগ্রাসন হিসেবে দেখছে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি