ট্রাম্প আমদানি পণ্যে শুল্ক বাড়ালে ‘খরচ বাড়বে’ মার্কিনিদেরই
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমদানি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন, কিন্তু এর ফলে সবচেয়ে বেশি চাপে পড়তে যাচ্ছেন সাধারণ মার্কিন নাগরিকরা। গত ৪ মার্চ ২০২৫ থেকে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে। ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই শুল্ক বিদেশি দেশগুলোকে শাস্তি দেবে এবং আমেরিকার অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এর খরচ আসলে গুণতে হবে আমেরিকান ক্রেতাদেরই।
এই শুল্কের ফলে দৈনন্দিন জিনিসপত্রের দাম বাড়তে শুরু করেছে। মেক্সিকো থেকে আসা অ্যাভোকাডো, টমেটো, বা টাকিলার দাম বাড়লে সেটা সরাসরি ক্রেতার পকেটে চাপ ফেলবে। কানাডা থেকে আসা কাঠ, শস্য, আর তেলের ওপর শুল্ক বাড়ায় বাড়ি তৈরির খরচ থেকে শুরু করে জ্বালানির দামও ঊর্ধ্বমুখী হবে। চীন থেকে আমদানি হওয়া ইলেকট্রনিক্স, জুতো, আর খেলনার দামও বাড়বে। পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক্সের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই শুল্কের কারণে গড়ে প্রতি মার্কিন পরিবারের বছরে ২,৬০০ ডলার অতিরিক্ত খরচ হতে পারে।
ট্রাম্প বলছেন, “এই শুল্ক অন্য দেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে, আমেরিকানদের ওপর নয়।” কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। আমদানিকারক কোম্পানিগুলো—যেমন ওয়ালমার্ট বা বেস্ট বাই—এই শুল্কের টাকা দিচ্ছে, এবং তারা সেই খরচ ক্রেতাদের কাছে হস্তান্তর করছে। একজন দোকানি, মেরি জনসন, বলেন, “আমার সাপ্তাহিক বাজারের খরচ গত সপ্তাহের তুলনায় ২০ ডলার বেড়েছে। এভাবে চললে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাবে।”
অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলছেন, এই শুল্ক মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারে। ২০১৮ সালে ট্রাম্পের শুল্ক নীতির পর ওয়াশিং মেশিনের দাম ১২ শতাংশ বেড়েছিল, যার ফলে ক্রেতারা বছরে ১.৫ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত গুণেছিলেন। এবারও একই পরিণতির আশঙ্কা রয়েছে। ট্যাক্স ফাউন্ডেশনের হিসেবে, এই শুল্ক গড়ে প্রতি পরিবারের ওপর ১,০৭২ ডলারের বোঝা চাপাবে।
কানাডা ও চীন ইতিমধ্যে প্রতিশোধমূলক শুল্কের ঘোষণা দিয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, “আমরা আমাদের অর্থনীতি রক্ষা করব।” এই বাণিজ্যযুদ্ধে আমেরিকান কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন, কারণ রপ্তানি কমে যাবে।