ফের রিমান্ডে পলক, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার কামরুল-আতিক-কামাল
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে ফের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে, এবং নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামালকে। রোববার (২৩ মার্চ, ২০২৫) পর্যন্ত প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, এই চারজনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার একাধিক মামলায় আইনি প্রক্রিয়া চলছে।
জুনাইদ আহমেদ পলককে শাহবাগ থানার একটি হত্যা মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। মামলার তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মানিক মিয়া নামে একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পুলিশের আবেদনে বলা হয়, পলকের সরাসরি নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। গত ১৪ আগস্ট গ্রেপ্তারের পর থেকে তার বিরুদ্ধে ৭৮টি মামলা দায়ের হয়েছে, এবং এর আগে বিভিন্ন মামলায় ৩৭ দিন রিমান্ডে ছিলেন তিনি। তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
অন্যদিকে, কামরুল ইসলাম, আতিকুল ইসলাম ও শাহ কামালকে নতুন করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। কামরুল ইসলামকে লালবাগ থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি গত ১৮ নভেম্বর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার হন এবং এর আগে তিন দিনের রিমান্ডে ছিলেন। পুলিশ দাবি করেছে, জুলাই আন্দোলনের সময় তার নির্দেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা হয়। আতিকুল ইসলামকে ভাটারা থানার সোহাগ মিয়া হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি গত ফেব্রুয়ারিতে চার দিনের রিমান্ডে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সিটি করপোরেশনের সম্পদ ব্যবহার করে আন্দোলন দমনে সহায়তা করেছেন। শাহ কামালকে নয়াপল্টনে যুবদল নেতা শামীম মোল্লার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত ১৭ আগস্ট মহাখালী থেকে গ্রেপ্তার হওয়া কামাল এর আগে পাঁচ দিন রিমান্ডে ছিলেন।
এই ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একজন লিখেছেন, “এরা জনগণের ওপর অত্যাচার করেছে, বিচার হওয়া উচিত।” অন্যদিকে, কেউ কেউ এটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে অভিহিত করেছেন। পলকের আইনজীবী ফারজানা ইসলাম রাখি বলেন, “এটি প্রতিশোধমূলক আচরণ। আমার মক্কেলকে ফাঁসানো হচ্ছে।” তিনি জানান, পলক কারাগারে ডিভিশনও পাচ্ছেন না।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে, এই নেতারা আন্দোলন দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ডিবি সূত্রে বলা হয়, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে পলক দাবি করেছেন, তিনি পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের তাকে বাধা দেন। কামরুল ও আতিকের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে।