শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| সন্ধ্যা ৭:২২

সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল তুরস্ক, এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবি

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ২৩, ২০২৫ ৪:৪৩ অপরাহ্ণ
সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল তুরস্ক, এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবি

সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল তুরস্ক, এরদোয়ানের পদত্যাগ দাবি

তুরস্ক এখন উত্তাল! রাস্তায় রাস্তায় হাজার হাজার মানুষের ক্ষোভের ঢেউ, প্ল্যাকার্ডে একটাই দাবি—প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোয়ানের পদত্যাগ। শনিবার (২২ মার্চ, ২০২৫) থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ তুরস্কের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। ইস্তাম্বুল, আঙ্কারা, ইজমিরসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতে লাখো মানুষ সরকারবিরোধী স্লোগানে মুখরিত। অর্থনৈতিক সংকট, মুদ্রাস্ফীতি, আর রাজনৈতিক দমননীতির বিরুদ্ধে জনতার এই জাগরণ যেন এরদোয়ানের দীর্ঘ ২০ বছরের শাসনের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, “এরদোয়ানের সময় শেষ। আমরা আর অত্যাচার সহ্য করব না।” সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশের টিয়ার গ্যাস আর জলকামানের মুখেও জনতা পিছু হটছে না। অনেকে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, ব্যারিকেড তৈরি করে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। একজন বিক্ষোভকারী বলেন, “আমাদের রুটি নেই, চাকরি নেই, আর এরদোয়ান ক্ষমতার মোহে অন্ধ। তাকে যেতেই হবে।”

তুরস্কের অর্থনীতি গত কয়েক বছরে চরম সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তুর্কি লিরার মূল্য হ্রাস, মূল্যস্ফীতির হার ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়া, আর জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিয়েছে। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, এরদোয়ানের স্বৈরাচারী শাসন মিডিয়ার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে এবং বিরোধী নেতাদের কারাগারে পাঠিয়েছে। এই বিক্ষোভে বিরোধী নেতারাও জনতার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে।

সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পুলিশ শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে, এবং অনেক শহরে মিডিয়া ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়েছে। তবে সামাজিক মাধ্যমে বিক্ষোভের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় সরকারের এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে। এরদোয়ান একটি জাতীয় ভাষণে বলেছেন, “এই বিক্ষোভ বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্র। আমরা তুরস্ককে অস্থির করতে দেব না।” তবে জনতা তার এই বক্তব্যকে “মিথ্যার পাহাড়” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই ঘটনার দিকে নজর রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তবে এরদোয়ানের মিত্র রাশিয়া এখনও নীরব। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিক্ষোভ যদি দীর্ঘায়িত হয়, তবে তুরস্কে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়বে, যা মধ্যপ্রাচ্যের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে।

ইতিমধ্যে ইস্তাম্বুলের তাকসিম স্কয়ার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। জনতার “এরদোয়ান, পালাও!” স্লোগানে মুখরিত রাস্তায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে। এই বিক্ষোভ কি এরদোয়ানের পতন ডেকে আনবে, নাকি তিনি আবারও ক্ষমতা ধরে রাখবেন? উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত