জাবিতে জুলাই অভ্যুত্থানে জড়িত ২৮৯ নেতাকর্মী বহিষ্কার, ৯ শিক্ষক বরখাস্ত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই মাসে সংঘটিত অভ্যুত্থানের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৮৯ জন নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং ৯ জন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে।
২০২৪ সালের জুন ও জুলাই মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান ঘটে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও এই আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। শিক্ষার্থীরা ফ্যাসিবাদবিরোধী ও গণতান্ত্রিক দাবিতে রাজপথে নেমে আসে, যা দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
জাবি প্রশাসন জুলাই অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৮৯ জন নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে। এদের মধ্যে ছাত্রলীগ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী রয়েছে। এছাড়াও, আন্দোলনের সময় সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ জন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত শিক্ষকদের মধ্যে বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক রয়েছেন।
জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থান শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। তরুণ প্রজন্মের মতাদর্শ-উত্তর গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতিফলন এই আন্দোলনে স্পষ্টভাবে দেখা যায়। বিভাজনমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে এই আন্দোলন একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির সূচনা বলে বিবেচিত হচ্ছে।
আন্দোলনের সময় নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে নিহত ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে তথ্য সংশোধনের জন্য নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।
জাবি প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে। তবে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ রয়ে গেছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের আন্দোলন ও প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই অভ্যুত্থান দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এটি তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক সচেতনতা ও সামাজিক দায়িত্ববোধের প্রতিফলন। ভবিষ্যতে এই ধরনের আন্দোলন ও প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় সকল পক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টা ও সংলাপের মাধ্যমে সমাধান খুঁজে বের করা উচিত।