শুক্রবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৫| রাত ৩:৪৯

যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনল্যান্ড দরকার, ন্যাটো প্রধানকে ট্রাম্প

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ১৫, ২০২৫ ৫:৫৬ অপরাহ্ণ
যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনল্যান্ড দরকার, ন্যাটো প্রধানকে ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনল্যান্ড দরকার, ন্যাটো প্রধানকে ট্রাম্প

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড দ্বীপটি কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দেয়। বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, যার জনসংখ্যা প্রায় ৫৬ হাজার। ট্রাম্পের এই আকস্মিক আগ্রহের পেছনে ভূরাজনৈতিক এবং প্রাকৃতিক সম্পদের বিষয়গুলো বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

গ্রিনল্যান্ডের ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত কৌশলগত। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে অবস্থিত এই দ্বীপটি উত্তর মেরু অঞ্চলে সামরিক ও বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এটি রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে গ্রিনল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিমে ‘পিটুফিক স্পেস বেস’ নামে একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে, যা মস্কো ও নিউইয়র্কের মাঝামাঝি অবস্থিত এবং মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর সর্বউত্তরের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।

ট্রাম্পের এই প্রস্তাবের পেছনে গ্রিনল্যান্ডের প্রাকৃতিক সম্পদও একটি বড় কারণ ছিল। দ্বীপটিতে তেল, গ্যাস এবং বিরল খনিজের বিপুল মজুদ রয়েছে, যা বৈদ্যুতিক গাড়ি, বায়ুকল এবং সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বরফ গলে যাওয়ায় এই সম্পদ আহরণ আরও সহজ হতে পারে, যা অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত লাভজনক।

তবে ডেনমার্ক এবং গ্রিনল্যান্ড কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের এই প্রস্তাবকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে। গ্রিনল্যান্ডের কর্মকর্তারা স্পষ্টভাবে জানান যে, তাদের দ্বীপ বিক্রির জন্য নয় এবং তারা তাদের স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন ট্রাম্পের প্রস্তাবকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, “গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। গ্রিনল্যান্ড ডেনিশ নয়। গ্রিনল্যান্ড গ্রিনল্যান্ডিক। আমি সত্যিই আশা করি যে, এটি সিরিয়াসলি নেওয়া হয়নি।”

ট্রাম্পের এই প্রস্তাব আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। কেউ কেউ এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে দেখেছেন, আবার কেউ এটিকে অযৌক্তিক ও অবাস্তব বলে মনে করেছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গ্রিনল্যান্ডের মতো স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের জনগণের ইচ্ছা ও স্বায়ত্তশাসনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত এবং এমন প্রস্তাব দেওয়ার আগে তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

সর্বোপরি, ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত হয়, যা ভূরাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং নৈতিক প্রশ্ন উত্থাপন করে। এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয় যে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও ভূরাজনীতিতে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মতামত ও স্বার্থকে বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি