শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| সন্ধ্যা ৭:২০

বিলুপ্তির পথে শকুন: পরিবেশের জন্য বড় হুমকি

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ১৩, ২০২৫ ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ
বিলুপ্তির পথে শকুন: পরিবেশের জন্য বড় হুমকি

বিলুপ্তির পথে শকুন: পরিবেশের জন্য বড় হুমকি

এক সময় প্রকৃতির অপরিহার্য অংশ ছিল শকুন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শকুনের ঝাঁক দেখা যেত, কিন্তু নানা প্রতিকূলতার কারণে আজ এই গুরুত্বপূর্ণ পাখিটি প্রায় বিলুপ্তির পথে। বন্য প্রাণী ও পাখি বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, শকুনের সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে কয়েক বছরের মধ্যে এটি পুরোপুরি হারিয়ে যেতে পারে। তখন শিক্ষার্থীদের শুধু বইয়ের পাতায় ছবির মাধ্যমে শকুন চিনতে হবে।

শকুনকে বলা হয় ‘প্রকৃতির সুইপার’ কারণ এটি মৃত প্রাণীর মাংস খেয়ে পরিবেশ দূষণ রোধ করে এবং বিভিন্ন রোগের জীবাণু ছড়ানো প্রতিরোধ করে। বিশ্বে ২৩ প্রজাতির শকুন থাকলেও বাংলাদেশে সাত প্রজাতির দেখা মিলত, যা এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। আশির দশকে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর চরে দলবদ্ধভাবে ঘুরে বেড়াত শকুন, কিন্তু এখন সেটি শুধুই স্মৃতি।

শকুন হিংস্র নয়, বরং পরিবেশের পরম বন্ধু। এটি চিল, ঈগল বা বাজপাখির মতো শিকারিও নয়। উঁচু গাছে বাসা তৈরি করা এই পাখির দৃষ্টিশক্তি অত্যন্ত প্রখর, যা অনেক উঁচু থেকেও খাদ্য শনাক্ত করতে পারে। একটি শকুন সাধারণত ১৫-২০টি ডিম পাড়ে এবং তিন সপ্তাহ পর বাচ্চা ফুটে। গড়ে ২৫ বছর আয়ু হলেও, বর্তমানে নানা প্রতিকূলতায় শকুনের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শকুন সাধারণ মৃত পশুর মাংস খেলে কোনো সমস্যা হয় না, কিন্তু ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করা মৃত পশুর মাংস খেলে তাদের কিডনি নষ্ট হয়ে যায় এবং দুই-তিন দিনের মধ্যে মারা যায়। এই কারণে গত তিন দশকে উপমহাদেশে প্রায় ৯৭ শতাংশ শকুন বিলুপ্ত হয়েছে।

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় শকুন সংরক্ষণ করা জরুরি। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে অচিরেই প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাবে এই গুরুত্বপূর্ণ পাখিটি, যা আমাদের জন্য এক বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি