মঙ্গলবার, ১১ই মার্চ, ২০২৫| রাত ৪:১৬

ইরানের ভয়ংকর যুদ্ধ মহড়া, নৌবাহিনীকে সেনাবাহিনীর চরম সমর্থন!

প্রতিবেদক
staffreporter
ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫ ১:৫২ অপরাহ্ণ
ইরানের ভয়ংকর যুদ্ধ মহড়া, নৌবাহিনীকে সেনাবাহিনীর চরম সমর্থন!

ইরানের ভয়ংকর যুদ্ধ মহড়া, নৌবাহিনীকে সেনাবাহিনীর চরম সমর্থন!

সমুদ্রের গর্জন আর আকাশে আগুনের লেলিহান শিখা—ইরানের সামরিক শক্তির এক ভয়ংকর প্রদর্শনী দেখলো বিশ্ব। ‘জুলফিকার ১৪০৩’ নামের এই বিশাল সামরিক মহড়া ইরানের দক্ষিণ উপকূলে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে স্থল, নৌ এবং বিমান বাহিনী একসঙ্গে অংশ নেয়। মূলত নৌবাহিনীর প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করতেই এই মহড়ায় ব্যাপক গোলাবর্ষণ ও আধুনিক যুদ্ধকৌশল অনুশীলন করা হয়।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী রেজা শেখ জানিয়েছেন, এই মহড়ায় দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক ইউনিটগুলো অংশ নেয়, যাদের মূল লক্ষ্য ছিল নৌবাহিনীকে প্রতিরক্ষামূলক সহায়তা দেওয়া। সেনাবাহিনীর দ্রুত প্রতিরক্ষা গড়ে তোলার সক্ষমতা যাচাই করতে ৫৫তম এয়ারবোর্ন ব্রিগেড ও ২২৩তম র‍্যাপিড রিয়াকশন ব্রিগেড বিদ্যুৎগতিতে নির্ধারিত স্থানে অবতরণ করে প্রতিরক্ষা লাইন স্থাপন করে। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর অগ্রযাত্রা রুখতে এই কৌশল অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

এই মহড়ায় ইরান তাদের আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সক্ষমতারও ভয়ংকর প্রদর্শন করে। ফাতাহ ও ফাজল ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়, পাশাপাশি আকাশে উৎক্ষেপণ করা হয় আরাস-২ লুটারিং মিউনিশন ও আক্রমণাত্মক ড্রোন আবাবিল-৪, ৫ এবং মহাজেব-৬। শুধু আক্রমণ নয়, শত্রুর গোয়েন্দা কার্যক্রম ব্যাহত করতে ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার ড্রোনও ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া, স্থলবাহিনী ও নৌবাহিনীর সমন্বিত যুদ্ধ পরিকল্পনার বাস্তবায়নও দেখা গেছে এই মহড়ায়। অ্যান্টি-ট্যাংক মিসাইল সিস্টেম মোতায়েন করা হয়, যা সামরিক যানবাহনের ওপর বসিয়ে শত্রুর অবস্থান লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিটগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা বাঁধ ও দুর্গ তৈরি করে শত্রুর অগ্রগতি ব্যাহত করে।

সেনাবাহিনীর বিমান শাখার ভূমিকাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। হেলিকপ্টার গানশিপ দিয়ে শত্রুর ওপর আকাশ থেকে হামলা চালানো হয়, মিসাইল দিয়ে শত্রুর ড্রোন ও যুদ্ধবিমান প্রতিহত করা হয়। সাজোয়া ট্যাংক ও সামরিক যানগুলো সুসংগঠিতভাবে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে শত্রুকে সমুদ্রে ফিরতে বাধ্য করে। এই অভিযানে ব্যবহৃত হয় ইরানের কারা ড্রোন ও এফ-৪ ফাইটার জেট।

বিশ্লেষকদের মতে, এই মহড়ার মাধ্যমে ইরান শুধু নিজের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করল না, বরং বিশ্বকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিল—তাদের প্রতিরক্ষায় তারা কোনো ছাড় দেবে না। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও চাপ উপেক্ষা করেই ইরান তার সামরিক সক্ষমতা ক্রমশ আরও শক্তিশালী করে তুলছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - সর্বশেষ