বিতর্কের মাঝেও শেষ পর্যায়ে বিপিএল, পরবর্তী আসরে পরিবর্তনের আশ্বাস বিসিবির
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলমান একাদশ আসর প্রায় শেষের পথে। প্লে-অফ ও ফাইনালসহ আর মাত্র চারটি ম্যাচ বাকি। তবে প্রতি আসরের মতো এবারও নানা বিতর্ক ও অসন্তোষ নিয়ে টুর্নামেন্টটি শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশেষ করে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর বিতর্কিত কর্মকাণ্ড দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ। একইসঙ্গে তিনি আগামী বিপিএল আরও সুসংগঠিত ও বিতর্কমুক্তভাবে আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘(দুর্বার) রাজশাহী যা করেছে, তাতে একটা টুর্নামেন্ট ধ্বংস করার জন্য তারাই যথেষ্ট! তবে আজ থেকে পাঁচ মাস আগেও পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল। তখন আমাদের নিশ্চিত হওয়া দরকার ছিল যে বিপিএল হবে কি না। হ্যাঁ, এই টুর্নামেন্টের কারণে আমাদের ভাবমূর্তি খারাপ হয়েছে, এটা স্বীকার করছি। তবে এখান থেকে বের হয়ে আসব, আগামী বিপিএলে পরিবর্তন দেখবেন।’
তিনি আরও জানান, বিপিএলের সূচি অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। বিশেষ করে আইএল টি-টোয়েন্টির মতো টুর্নামেন্টের সঙ্গে বিপিএলের সময় মিলে গেলে প্রতিযোগিতা কঠিন হয়ে পড়ে। ভবিষ্যতে এসব সমস্যার সমাধান করতে চান তারা। এছাড়া বিপিএল আয়োজনে কোনো ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনাও আছে বিসিবির। তার মতে, ‘আমরা জানি কী করতে হবে। এমনকি পাঁচ দলের হলেও আমাদের কাউকে খুঁজতে হবে না। আমরা পরিকল্পনা করেছি, প্রথম-দ্বিতীয় বছরে না হলেও তৃতীয় বছরেই লাভের মুখ দেখা যাবে।’
এবারের বিপিএলে বেশ কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে বলে মনে করেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, ‘অনেক ইতিবাচক দিকও রয়েছে, যা আমাদের মনে রাখা উচিত। আয়োজনে কী কী চ্যালেঞ্জ ছিল, তা বুঝতে হবে। ৯০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয়েছে, ১০ কোটি টাকারও বেশি। মাঠে রান হচ্ছে, ভালো খেলা হচ্ছে। এই ইতিবাচক দিকগুলোও তুলে ধরা উচিত।’
এদিকে, বিপিএলে পারিশ্রমিক ইস্যু নিয়ে বিশেষ করে দুর্বার রাজশাহীর টালবাহানা নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘রাজশাহীর মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি, পারিশ্রমিক পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি সময়মতো না দেওয়া হয়, তবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে, তাই এর পেছনের কারণ খুঁজে বের করতে সত্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করা হবে।’
এছাড়া, চিটাগং কিংসের স্বত্বাধিকারী সামির কাদের চৌধুরীর পারভেজ ইমনের পারিশ্রমিক নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য নিয়েও তিনি প্রতিক্রিয়া জানান। সামির বলেছিলেন, ‘টাকা গাছে ধরে না। সে সন্তুষ্ট করতে না পারলে কেন দেবো?’— যা নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা খুবই হতাশাজনক। তাকে সতর্ক করা হয়েছে। খেলোয়াড়কে এভাবে বলার অধিকার তার নেই। বিসিবিকে বলেছি, নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে।’
বিপিএল যতই জনপ্রিয় হোক, প্রতি আসরেই বিতর্ক যেন এর অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়ায়। তবে বিসিবি পরবর্তী আসরকে আরও পেশাদার ও বিতর্কমুক্ত করতে যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেটি বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব হবে, তা সময়ই বলে দেবে।