বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র!
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এই আদেশে সই করেন তিনি। শপথের পরপরই বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে সই করেন ট্রাম্প, যার মধ্যে অন্যতম ছিল ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ।
ট্রাম্প সই করার পর বলেন, “ওহহ, এটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ।” তার বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় এত দিন অন্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র ‘অন্যায্য পরিমাণে’ অর্থ প্রদান করেছে। তিনি এই অর্থ ব্যয়কে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের জন্য অবিচার হিসেবে অভিহিত করেন এবং এটিকে অর্থনৈতিক অপচয় বলেও উল্লেখ করেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার বিষয়ে ট্রাম্প বহুদিন ধরে কঠোর অবস্থান নিয়ে কথা বলে আসছিলেন। তার মতে, সংস্থাটি মহামারি মোকাবিলায় ব্যর্থ এবং চীনের প্রতি পক্ষপাত দেখিয়েছে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২০ সালের জুলাই মাসে, যখন করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল, তখন ট্রাম্প প্রশাসন ডব্লিউএইচও থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে বেরিয়ে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সময়ও ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, সংস্থাটি চীনের প্রতি একতরফাভাবে পক্ষপাতদুষ্ট এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই সংস্থার অন্যতম বড় অর্থদাতা হিসেবে দেশটি বেশিরভাগ সময়ই নীতিনির্ধারণী কার্যক্রমে সক্রিয় ছিল। তবে ট্রাম্পের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করে, সেই তুলনায় সংস্থাটি তাদের প্রয়োজনীয় সেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ স্বাস্থ্যসেবার বৈশ্বিক প্রচেষ্টাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন মহামারি ও রোগ প্রতিরোধে যে ধরনের সমন্বিত উদ্যোগ নেয়, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা বন্ধ হলে সেসব উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হবে।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার জন্য যেখানে সমন্বিত বৈশ্বিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন, সেখানে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অনেকে।