ঈদুল আজহায় চামড়া সংরক্ষণে বিসিকের প্রস্তুতি ও সরকারের কার্যকর উদ্যোগ
ঈদুল আজহায় কোরবানিকৃত পশুর চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) পূর্ব থেকেই বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে স্থানীয় পর্যায়ে লবণের মজুত নিশ্চিত করা, চামড়া ছাড়ানো ও সংরক্ষণের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গণমাধ্যম এবং লিফলেটের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হয়।
সরকারের বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংগুলোর চাহিদা অনুযায়ী বিনামূল্যে লবণ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়, যাতে তারা উপযুক্তভাবে চামড়া সংরক্ষণ করতে পারে এবং বাজারে ন্যায্য মূল্য পায়। এ উদ্যোগের ফলে গত বছরের তুলনায় এবার চামড়া সংরক্ষণের পরিমাণ বহুগুণে বেড়েছে। গত বছর যেখানে ২.০৯ লক্ষ চামড়া সংরক্ষিত হয়েছিল, এবার ৯৩৩০টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ১৩.০৮ লক্ষ চামড়া সংরক্ষণ করেছে। পাশাপাশি, সারা দেশের আড়তদার, ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকরা নিজস্ব অর্থায়নে লবণ কিনে চামড়া সংরক্ষণ করেছেন।
২০২৫ সালের জন্য পশু কোরবানির আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী লবণের চাহিদা ধরা হয়েছিল ৬১ হাজার ৭৪৮ মেট্রিক টন, কিন্তু মজুত ছিল ৯৩ হাজার ২২৯ মেট্রিক টন, যা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট বেশি। দেশের প্রতিটি জেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে লবণ সরবরাহ থাকলেও কিছু এলাকায় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে। কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী চামড়ায় লবণ না দিয়ে দাম বাড়ার আশায় আড়তদারদের সঙ্গে দরকষাকষি করতে গিয়ে সময়ক্ষেপণ করেন। আবার কিছু আড়তদার চামড়া কিনতে অনিচ্ছা প্রকাশ করায় চামড়া নষ্ট হওয়ার ঘটনাও ঘটে, যা অনভিপ্রেত।
এছাড়া সাভার ট্যানারি নগরীর সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (সিইটিপি)-এ প্রয়োজনীয় কেমিক্যাল, ইঞ্জিনের ওভারহলিং এবং পুকুর খননের মতো প্রস্তুতিমূলক কাজ আগে থেকেই সম্পন্ন করা হয়। ট্যানারির বাইরে কোরবানির পশুর মাথা, লেজ ও অন্যান্য অংশ ফেলা রোধে ট্যানারি মালিকদের পূর্বেই নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং ৮টি প্রতিষ্ঠানকে এসব অংশ ট্যানারির বাইরে বিক্রির অনুমতিও দেওয়া হয়। যদিও কিছু অংশ নদীর পাড়ে ফেলার খবর পাওয়া গেছে, তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে যাতে এমন না ঘটে, সে বিষয়ে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।