শুক্রবার, ১৩ই জুন, ২০২৫| সকাল ১১:৫৫

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ বন্যায় নিহত ৪৯, নিখোঁজ শিশুদের খোঁজে তল্লাশি চলছে

প্রতিবেদক
staffreporter
জুন ১২, ২০২৫ ৯:৫৪ পূর্বাহ্ণ
দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ বন্যায় নিহত ৪৯, নিখোঁজ শিশুদের খোঁজে তল্লাশি চলছে

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ বন্যায় নিহত ৪৯, নিখোঁজ শিশুদের খোঁজে তল্লাশি চলছে

দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলীয় ইস্টার্ন কেপ প্রদেশে ভয়াবহ বন্যা, ভারী বৃষ্টি ও তুষারঝড়ে অন্তত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন স্কুলশিক্ষার্থী রয়েছেন। নিখোঁজ শিশুদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ছে বলে জানিয়েছেন প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী অস্কার মাবুয়ানে।

মঙ্গলবার সকালে মথাতা শহরের একটি সেতু পার হওয়ার সময় একটি বাস বন্যার পানিতে ভেসে গেলে সেটি পরবর্তীতে একটি নদীর পাড়ে পাওয়া যায়। বাসে থাকা চালক, কন্ডাক্টর ও চার শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও বাসের মধ্যে কাউকে পাওয়া যায়নি, এখনো নিখোঁজ চার শিশুর খোঁজে অভিযান চলছে। স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, মোট আটজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাসে মোট ১৩ জন ছিলেন, যাদের মধ্যে ১১ জনই স্কুলশিক্ষার্থী। তিনজন শিশু গাছে উঠে বেঁচে যান বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থা এসএবিসি।

বুধবার সকালে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রী মাবুয়ানে জানান, শত শত মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে অস্থায়ী আশ্রয়ে রাত কাটাচ্ছেন। তিনি স্থানীয়দের প্রশংসা করে বলেন, “যারা বন্যার শুরুতেই প্রতিবেশীদের সতর্ক করেছেন ও নিখোঁজদের খোঁজে সাহায্য করছেন, তারা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।”

ইস্টার্ন কেপ প্রদেশের ৫৮টি স্কুল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বিশেষ করে ওআর টাম্বো, আমাথোলি ও আলফ্রেড নজো জেলার কিছু এলাকায়। পাশাপাশি প্রতিবেশী কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশেও দুর্যোগ দেখা দিয়েছে, যেখানে ৬৮টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। ভারী বৃষ্টিপাত, তুষারঝড় ও প্রবল বাতাসে মঙ্গলবার থেকে প্রায় ৫ লাখ বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সংস্থা এসকম জানিয়েছে, বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধারে কাজ চলছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক জানিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “শীতকালীন এই ভয়াবহ আবহাওয়ার সময় আমাদের সতর্কতা, সহানুভূতি ও সহযোগিতা আরও বেশি প্রয়োজন।”

এই ভয়াবহ শীতপ্রবাহ সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে ইস্টার্ন কেপ ও কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশে। ইস্টার্ন কেপই দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মস্থান। দুর্যোগের কারণে অনেক বড় বড় মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যাতে প্রাণহানি আরও না ঘটে। উদ্ধারকাজ এখনো অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকায় জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত শীতকাল থাকে এবং এই সময়ে তাপমাত্রা প্রায়ই হিমাঙ্কের নিচে নেমে যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এখন বৃষ্টিপাত আরও বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। এর আগেও গত ৩০ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত আকস্মিক বন্যায় ৪ হাজার ৫০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছিলেন।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত