সুশাসন ও আইনের শাসনে সংস্কার কার্যক্রম জোরদার করছে সরকার: আসিফ নজরুল
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং দেশের সকল সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সুশাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। তিনি বলেন, ভবিষ্যতের শাসকরা যেন জনগণের ওপর অত্যাচার চালাতে না পারে, মামলা জটিলতায় মানুষ সর্বস্বান্ত না হয়, এবং নাগরিক স্বাধীনতা যাতে ব্যাহত না হয়—এই লক্ষ্যেই সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর (অ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডিন্যান্স, ২০২৫’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, একটি সংজ্ঞায়িত এবং স্বচ্ছ আইনগত কাঠামোর মধ্যে মানুষ যাতে নিশ্চিন্তে বাস করতে পারে, সেটিই সরকারের সংস্কারের অন্যতম উদ্দেশ্য।
আসিফ নজরুল জানান, বিভিন্ন কমিশনের মাধ্যমে পাওয়া শতাধিক আশু বাস্তবায়নযোগ্য সংস্কার প্রস্তাব ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে সেগুলোর বাস্তবায়ন সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে। তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে দেওয়ানি কার্যবিধি (CPC), সাইবার সুরক্ষা আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি আইনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আইন সংশোধন করা হয়েছে। শিগগিরই জুডিশিয়াল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান আইন সংশোধনও সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গুম প্রতিরোধ আইন নিয়েও মতবিনিময় করা হয়েছে এবং সেটিও এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে।
তিনি জানান, অর্থ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও আইন সংশোধনের কাজ চলছে। তবে সংবিধান সংশোধনসহ যেসব বড় সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রয়োজন, সেগুলোর জন্য ‘জুলাই চার্টার’-এর অপেক্ষায় রয়েছে সরকার। এই চার্টারটি চূড়ান্ত হলে বৃহৎ সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন সহজ হবে।
তিনি স্বীকার করেন, বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়সীমা ও কাঠামো সংস্কার বাস্তবায়নের তুলনায় কিছুটা সীমিত, তাই সরকারকে বাড়তি পরিশ্রম করতে হচ্ছে। তিনি আশ্বস্ত করেন, সরকার কোনোভাবেই রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য উপেক্ষা করে সংবিধান পরিবর্তনের পথে হাঁটবে না।
সভায় উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, অ্যাডভোকেট মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, অ্যাডভোকেট শিশির মনির ও অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহানসহ বিশিষ্ট আইনজীবীরা। তাঁরা খসড়া অধ্যাদেশের বিভিন্ন ধারা-উপধারা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন।
