স্ক্যাম মেসেজ চেনার উপায় ও করণীয়: সচেতন থাকুন ডিজিটাল প্রতারণা থেকে
বর্তমান ডিজিটাল যুগে আমরা প্রতিদিন নানা মাধ্যমে বার্তা পেয়ে থাকি—মেসেজ, ই-মেইল কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। এসব বার্তার অনেকগুলো প্রথম দেখায় নিরীহ বা বিশ্বাসযোগ্য মনে হলেও, এর মধ্যে অনেক স্ক্যাম বা প্রতারণামূলক বার্তা লুকিয়ে থাকতে পারে। সামান্য অসচেতনতা আপনাকে অর্থনৈতিক ও ব্যক্তিগত তথ্যের বিশাল ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। তাই স্ক্যাম মেসেজ চিনতে পারা ও সঠিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো অত্যন্ত জরুরি।
স্ক্যাম মেসেজ চেনার ৭টি সাধারণ লক্ষণ:
১. অপরিচিত প্রেরক:
আপনি যদি কোনো অজানা নাম্বার, ই-মেইল বা প্রোফাইল থেকে বার্তা পান, তাহলে সেটি যাচাই না করে বিশ্বাস করবেন না। স্ক্যামাররা সাধারণত নতুন নম্বর বা ছদ্মনামে বার্তা পাঠায়।
২. অতিরিক্ত প্রলোভন:
“লটারি জিতেছেন!”, “ফ্রি উপহার!”, “বিনামূল্যে ঘুরতে যান” ইত্যাদি আকর্ষণীয় প্রস্তাব বাস্তবে সাধারণত সত্য হয় না। এই ধরনের অফারে ক্লিক করলেই ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়ে।
৩. তাড়াহুড়োর চাপ:
“এখনই অ্যাকশন নিন”, “আজকের মধ্যেই রেজিস্টার করুন” — এমন ভাষায় তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা হয়। সময় না দিলে আপনি যাচাই করার সুযোগও পাবেন না।
৪. ভুয়া লিংক:
মেসেজে থাকা লিংকে ক্লিক করার অনুরোধ এলে সতর্ক হোন। ভুয়া লিংকে প্রবেশ করে আপনার তথ্য চুরি হতে পারে, এমনকি ফোনে ভাইরাসও ঢুকে যেতে পারে।
৫. ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া:
কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক কখনোই মেসেজে এনআইডি নম্বর, ব্যাংক একাউন্ট, পাসওয়ার্ড বা ওটিপি চায় না। এসব চাওয়া হলে বুঝে নিন, এটি স্ক্যাম।
৬. ভুল বানান ও ভাষা:
বিভিন্ন ভুল বানান, অদ্ভুত বাক্যগঠন বা ভাঙা ইংরেজি—এসব সাধারণত স্ক্যাম মেসেজের বৈশিষ্ট্য। পেশাদার বার্তাগুলো সাধারণত নির্ভুল ও পরিপাটি হয়।
৭. অফিশিয়াল নম্বর বা ইমেইলের অভাব:
যে প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের নামে মেসেজ আসছে, তারা যদি অফিসিয়াল নম্বর বা ভেরিফায়েড ইমেইল ব্যবহার না করে, তাহলে সেটি সন্দেহজনক বলেই ধরে নিন।
স্ক্যাম মেসেজ পেলে কী করবেন:
- বার্তাটি এড়িয়ে যান, কোনো উত্তর দেবেন না।
- লিংকে ক্লিক করবেন না বা কোনো অ্যাপ/ফাইল ডাউনলোড করবেন না।
- প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করে বার্তাটি যাচাই করুন।
- বাংলাদেশে বিটিআরসি বা সাইবার ক্রাইম ইউনিটে অভিযোগ করতে পারেন।
- সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—সচেতন থাকা। সন্দেহজনক কোনো বার্তা পেলে আগে যাচাই করুন, পরে বিশ্বাস করুন।
প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করেছে, তবে সচেতন না হলে এটি আমাদের জন্য ভয়ানক ক্ষতির কারণও হতে পারে। তাই নিজেকে ও আশেপাশের মানুষদের সতর্ক রাখুন, স্ক্যাম মেসেজ থেকে সুরক্ষিত থাকুন।