ওজন কমাতে দ্রুত নাকি ধীরে হাঁটবেন? সমাধান ‘ইন্টার্ভাল ওয়াকিং’-এ
ওজন কমানোর জন্য হাঁটছেন, কিন্তু ধীরে হাঁটবেন নাকি দ্রুত—এই প্রশ্নে দ্বিধায় পড়েছেন? আপনার মতো অনেকেই এই সমস্যায় পড়েন। কেউ কেউ দ্রুত হাঁটতে গিয়ে কিছুক্ষণ পরেই দম হারিয়ে ফেলেন, আবার কেউ ধীরে হাঁটলে ফল মিলবে কি না তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন। এ সমস্যার সহজ সমাধান হতে পারে নতুন এক কৌশলে হাঁটা, যার নাম ‘ইন্টার্ভাল ওয়াকিং’।
ইন্টার্ভাল ওয়াকিং মানে হলো পালা করে হাঁটার গতি পরিবর্তন করা। প্রথমে কয়েক মিনিট দ্রুত হাঁটবেন, তারপর কয়েক মিনিট ধীরে হাঁটবেন। আবার কিছুক্ষণ পর গতি বাড়াবেন। এই ছন্দ বজায় রেখেই চলবে হাঁটা। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের ‘হার্ভার্ড হেলথ পাবলিশিং’–এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, এভাবে হাঁটার ফলে হৃৎস্পন্দনের গতি বাড়ে, যা শরীরের ক্যালরি পোড়ানোর হারও বাড়িয়ে দেয়।
সম্প্রতি আরও একটি নির্দিষ্ট নিয়ম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে—‘৫-৪-৫ রুটিন’। এই পদ্ধতিতে প্রথমে ৫ মিনিট দ্রুত হাঁটতে বা হালকা দৌড়াতে হয়, তারপর ৪ মিনিট ধীরে হাঁটতে হয় দম নেওয়ার জন্য। এরপর আবার ৫ মিনিট দ্রুত হাঁটা বা দৌড়। দিনে দুই-তিনবার এই রুটিন অনুসরণ করলেই ৩০ থেকে ৪৫ মিনিটের মতো কার্যকর শরীরচর্চা সম্পন্ন হয়ে যায়। মজার বিষয় হলো, এর জন্য জিম বা ট্রেডমিলের কোনো প্রয়োজন নেই; খালি জায়গা বা পার্কই যথেষ্ট।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইন্টার্ভাল ওয়াকিং একটানা ধীরে হাঁটা বা দৌড়ানোর চেয়ে বেশি উপকারী। কারণ এতে শরীরে উচ্চ-মাত্রার ব্যায়াম (হাই ইন্টেনসিটি) ও সাধারণ অ্যারোবিক ব্যায়াম দুই ধরনের প্রভাব পড়ে। ফলে দ্রুত ফ্যাট বার্ন হয়, হার্টের কার্যকারিতা বাড়ে এবং শরীরের পেশি টোনড থাকে। ‘সেল মেটাবলিজম’ নামের বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৫ থেকে ৮০ বছরের ব্যক্তিরাও ইন্টার্ভাল ওয়াকিংয়ের মাধ্যমে হৃদ্যন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করেছেন এবং বয়সজনিত পেশিক্ষয় অনেকাংশে রোধ করতে পেরেছেন।
সব মিলিয়ে, যারা ওজন কমাতে চান, হার্টকে সুস্থ রাখতে চান কিংবা সহজে শরীরচর্চা করতে চান, তাদের জন্য ইন্টার্ভাল ওয়াকিং হতে পারে এক সহজ, কার্যকর ও টেকসই উপায়।