শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| দুপুর ১:০৩

মার্কিন শুল্ক ছাড়ে স্বস্তির হাওয়া প্রযুক্তি খাতে

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ১৭, ২০২৫ ৫:৪৫ অপরাহ্ণ
মার্কিন শুল্ক ছাড়ে স্বস্তির হাওয়া প্রযুক্তি খাতে

মার্কিন শুল্ক ছাড়ে স্বস্তির হাওয়া প্রযুক্তি খাতে

বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনার মাঝেও মার্কিন প্রশাসনের এক সিদ্ধান্ত প্রযুক্তি খাতে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে আমদানি করা স্মার্টফোনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্যের ওপর শুল্ক ছাড় ঘোষণা করেছে, যা বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এবং সাধারণ ভোক্তা উভয়ের জন্যই স্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এর ফলে অ্যাপল, ডেলসহ শীর্ষ কোম্পানিগুলোর ব্যয় কমবে এবং ভোক্তারাও তুলনামূলক সাশ্রয়ী দামে পণ্য কিনতে পারবেন।

এই শুল্ক অব্যাহতি কার্যকর হবে ৫ এপ্রিল রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে পরবর্তী ৯০ দিনের জন্য। অন্তত ২০টি পণ্যের শ্রেণি এই সুবিধার আওতায় আসবে, যার মধ্যে রয়েছে স্মার্টফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, হার্ড ড্রাইভ, ডাটা প্রসেসিং যন্ত্রপাতি, সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস, মেমোরি চিপ এবং ফ্ল্যাট-প্যানেল ডিসপ্লে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত অ্যাপল, ইনটেল, নভিডিয়া, কোয়ালকমের মতো কোম্পানিগুলোর ওপর থেকে বাড়তি শুল্কের চাপ কমাবে। আগে শুল্কের কারণে পণ্যের মূল্য অনেকটা বাড়তে বসেছিল, যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তার ঘাড়েই গিয়ে পড়তো। অনুমান করা হচ্ছিল, শুল্ক ছাড় না এলে একটি হাই-এন্ড আইফোনের দাম ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গিয়ে ২,৩০০ ডলারে পৌঁছাতে পারত।

এই সিদ্ধান্ত শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বাজারেও ইতিবাচক বার্তা হিসেবে ধরা পড়ছে। সরবরাহ ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে উৎপাদন খরচ কমবে এবং সাশ্রয়ী দামে পণ্য পাওয়া সম্ভব হবে। যেমন তাইওয়ান থেকে সেমিকন্ডাক্টর বা ভারতে তৈরি আইফোন আমদানিতেও খরচ কমবে।

তবে এই শুল্ক ছাড় সব পণ্যের জন্য নয়। সিদ্ধান্তটি শুধুমাত্র ১২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। চীনা পণ্যের ওপর আগের ২০ শতাংশ শুল্ক এখনই প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা নেই। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, সেমিকন্ডাক্টর ও ইলেকট্রনিক পণ্য নিয়ে তার পরিকল্পনার বিস্তারিত শিগগিরই জানানো হবে।

এর আগে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প অ্যাপল, গুগল, মাইক্রোসফটসহ বড় প্রযুক্তি কোম্পানির সিইওদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এমনকি তার শপথ অনুষ্ঠানে এসব প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মার্কিন সেন্সাস ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি আমদানিকৃত পণ্য ছিল স্মার্টফোন, যার বেশিরভাগই চীন থেকে এসেছে। এই তথ্যই বোঝায় প্রযুক্তি খাতে চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরতা কতটা গভীর।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এই শুল্ক ছাড়ের সুবিধা পেয়ে যেমন নিজেদের বাজার ধরে রাখতে পারবে, তেমনি সাধারণ ভোক্তারাও কিছুটা স্বস্তি পাবেন দাম কমায়। ব্যবসা এবং বাজার স্থিতিশীল রাখার এই প্রয়াস আগামী দিনে প্রযুক্তি খাতের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি