বুধবার, ১৬ই এপ্রিল, ২০২৫| সন্ধ্যা ৭:২৪

ইভ্যালির রাসেল ও শামীমার তিন বছরের কারাদণ্ড, জরিমানা ৫ হাজার টাকা

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ১৪, ২০২৫ ৯:০৯ অপরাহ্ণ

ইভ্যালির রাসেল ও শামীমার তিন বছরের কারাদণ্ড, জরিমানা ৫ হাজার টাকা

ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রাহকের টাকা আত্মসাত ও প্রতারণার অভিযোগে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। রোববার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. মিসবাহ উর রহমানের আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ইভ্যালির মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়ে বাদী রাজিব উল্লেখযোগ্য আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। তিনি অভিযোগ করেন, ইভ্যালি তার কাছ থেকে ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি মোহাম্মদ রাসেল ও শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া রায়ের পর বলেন, “আসামিরা তাদের প্রতারণামূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়েছেন এবং তাদের আর্থিক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছেন। আদালত এই কাজকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করেছেন। এই রায় ভুক্তভোগীদের মনে ন্যায়বিচারের অনুভূতি ফিরিয়ে আনবে বলে আমরা আশাবাদী।”

ইভ্যালি বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতে একসময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। তবে ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গ্রাহকের টাকা ফেরত না দেওয়া, পণ্য সরবরাহে ব্যর্থতা এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এরপর থেকে ইভ্যালি এবং এর প্রতিষ্ঠাতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়। মোহাম্মদ রাসেল ও শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলোর মধ্যে এটি একটি।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার শুনানি চলাকালীন বাদীপক্ষ ইভ্যালির প্রতারণার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করে। তারা দাবি করেন, ইভ্যালি গ্রাহকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করলেও প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে। এই আচরণ গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দিয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় আদালত উল্লেখ করেন, আসামিদের কার্যকলাপ সাধারণ মানুষের আস্থা ভঙ্গ করেছে এবং ই-কমার্স খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তিন বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানার এই রায়কে অনেকে ইভ্যালি কেলেঙ্কারির শিকার গ্রাহকদের জন্য ন্যায়বিচারের একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

তবে এই রায় নিয়ে আসামিপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। আইনজ্ঞরা বলছেন, আসামিরা উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন।

ইভ্যালি কেলেঙ্কারি বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ঘটনার পর দেশে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই রায়ের মাধ্যমে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি