গাজায় যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহুকে চাপ ট্রাম্পের
গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে নেতানিয়াহুকে তাগিদ দিচ্ছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হয়। এই সময়ের মধ্যে ২০২৩ সালের নভেম্বরে এক সপ্তাহ এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ৫০ দিনের বেশি সময় যুদ্ধবিরতি কার্যকর ছিল। তবে এই সময় বাদে ইসরায়েল গাজায় তার সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে অস্ত্র ও অন্যান্য সহায়তা দিয়ে সমর্থন জানিয়ে আসছে।
কিন্তু ইয়েদিওথ আহরোনোথ-এর গত বৃহস্পতিবারের (১০ এপ্রিল) প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের ধৈর্য কমে আসছে। তিনি দ্রুত এই সংঘাতের অবসান চান। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহুর সঙ্গে ট্রাম্পের একটি বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প নেতানিয়াহুর প্রশংসা করলেও বন্ধ দরজার পেছনে তিনি গাজা ইস্যুতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হামাসের সঙ্গে একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তি করার জন্য চাপ দিয়েছেন, যাতে গাজায় আটক ৫৯ জন ইসরায়েলি জিম্মি—জীবিত ও মৃত—ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়।
ট্রাম্পের লক্ষ্য হলো এমন একটি চুক্তি, যার মাধ্যমে সব জিম্মি মুক্তি পাবে এবং গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হবে। ইয়েদিওথ আহরোনোথ আরও জানায়, ট্রাম্প প্রশাসন এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য নতুন উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেছে, এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি চান, এই যুদ্ধের অবসানের মাধ্যমে ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হোক। এছাড়া, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান পারমাণবিক আলোচনাও ট্রাম্পের এই বিস্তৃত পরিকল্পনার অংশ বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু ইসরায়েলি নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। এই বৈঠকে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন, এবং যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া, নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে জানানো হয়, তিনি ইলকানা বোহবোত এবং রোম ব্রাসলাভস্কি নামে দুই জিম্মির পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, জিম্মিদের মুক্তির জন্য আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
গাজা যুদ্ধের এই পরিস্থিতি কীভাবে এগোয়, তা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রাম্পের চাপ এবং নেতানিয়াহুর পরবর্তী পদক্ষেপ এখন সবার নজরে।
সূত্র: ইয়েদিওথ আহরোনোথ, টাইমস অব ইসরায়েল