শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| সকাল ৬:১০

উদ্ধার তৎপরতার মধ্যেই ফের ভূমিকম্প মিয়ানমারে

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ১১, ২০২৫ ৭:৩৬ অপরাহ্ণ
উদ্ধার তৎপরতার মধ্যেই ফের ভূমিকম্প মিয়ানমারে

উদ্ধার তৎপরতার মধ্যেই ফের ভূমিকম্প মিয়ানমারে

মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ধাক্কা এখনো সামলে ওঠার আগেই দেশটি ফের কেঁপে উঠেছে নতুন কম্পনে। গত কয়েক দিন ধরে চলা উদ্ধার তৎপরতার মধ্যেই শুক্রবার (১১ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২ মিনিটে ৪.১ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এই ঘটনা মিয়ানমারের জনগণের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

ভারতের ভূমিকম্প গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (এনসিএস) সামাজিক মাধ্যম এক্সে জানিয়েছে, এই কম্পনের উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রাথমিক ধাক্কার পর একাধিক আফটারশকও রেকর্ড করা হয়েছে। এই নতুন কম্পন উদ্ধারকারী দলগুলোর জন্য কাজকে আরও জটিল করে তুলেছে, কারণ তারা এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে ব্যস্ত।

এর আগে, গত ২৮ মার্চ মিয়ানমারে আঘাত হানে দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্প, যার মাত্রা ছিল ৭.৭ এবং ৬.৪। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানায়, এই কম্পনের কেন্দ্র ছিল মান্দালয় শহর থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে, ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভূমিকম্প গত এক শতাব্দীর মধ্যে মিয়ানমারের সবচেয়ে ভয়াবহ। এর কম্পন বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ-পশ্চিম চীন, ভিয়েতনাম, লাওস এবং কম্বোডিয়াতেও অনুভূত হয়।

তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপ থেকে ৩,৬০০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে চীনের সিনহুয়া নিউজের তথ্য অনুযায়ী, ২৮ মার্চের ভূমিকম্পে ৫,১৭০ জন আহত হয়েছেন এবং ১৬০ জন এখনো নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মানুষদের খুঁজে বের করা এবং আহতদের চিকিৎসা দেওয়া এখনো উদ্ধারকারী দলগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

ভূমিকম্পের পরপরই চীন, রাশিয়া এবং ভারত তাদের উদ্ধারকারী দল পাঠায়। পরে বাংলাদেশও উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তা দল পাঠিয়ে মানবিক সহযোগিতার হাত বাড়ায়। বাংলাদেশের দল ভবনের ধ্বংসাবশেষে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার এবং শনাক্তকরণে কাজ করছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতের উদ্ধারকারী দল মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোর ছয়টি এবং মান্দালয়ের ছয়টি এলাকায় তৎপরতা চালাচ্ছে।

এই ভূমিকম্প মিয়ানমারের অবকাঠামো এবং জনজীবনে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। বাড়িঘর, স্কুল, হাসপাতাল ধসে পড়ায় হাজার হাজার মানুষ এখনো খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে। বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য এবং চিকিৎসার অভাবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। নতুন এই কম্পন পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের উদ্ধারকারী দলের ভূমিকা এই সংকটে প্রশংসিত হচ্ছে। তবে উদ্ধার তৎপরতার জন্য সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। নতুন ভূমিকম্প এবং আফটারশকের কারণে উদ্ধারকারীদের নিরাপত্তাও এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি