আর্সেনালের ১৭ মিনিটের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত রিয়াল মাদ্রিদ
১৭ মিনিট—সময়টা খুব বেশি নয়, কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে আর্সেনালের বিপক্ষে এই অল্প সময়টাই রিয়াল মাদ্রিদের জন্য হয়ে উঠেছিল ভয়ঙ্কর। লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে আর্সেনালের তাণ্ডবে ৩-০ গোলের বড় হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ইউরোপের অন্যতম শক্তিশালী দলটিকে। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে ডেক্লান রাইসের জোড়া ফ্রি কিক এবং মাইকেল মেরিনোর নিখুঁত ফিনিশিংই গুঁড়িয়ে দেয় রিয়াল মাদ্রিদের প্রতিরক্ষা।
ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দল ছিল আক্রমণাত্মক। প্রথম মিনিটেই কিলিয়ান এমবাপে শট নিলেও তা ঠেকিয়ে দেন আর্সেনালের গোলরক্ষক দাভিদ রায়া। সপ্তম মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেলেও রিয়াল গোল হজম থেকে বেঁচে যায়, থমাস পার্টের হেড সতীর্থের গায়ে লাগায় ব্যর্থ হয় আক্রমণ। ৩১ মিনিটে বেলিংহ্যামের দুর্দান্ত পাস থেকে একেবারে ফাঁকা গোল পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন এমবাপে।
প্রথমার্ধে গোল না এলেও দ্বিতীয়ার্ধে দৃশ্যপট বদলে যায়। ৫৮তম মিনিটে ফ্রি কিক থেকে ডান পায়ের বাঁকানো শটে দারুণ গোল করেন ডেক্লান রাইস, যা আর্সেনালকে লিড এনে দেয়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, রাইসের ক্যারিয়ারে এটি ছিল প্রথম ফ্রি কিক গোল। কিন্তু এরপর মাত্র ১২ মিনিট পরই আবারও ফ্রি কিক থেকে জাল কাঁপিয়ে বসেন তিনি, এবার বল জড়ায় উপরের পোস্ট ছুঁয়ে। এই গোলেই চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে নকআউটে দুটি সরাসরি ফ্রি কিক গোল করার কীর্তি গড়েন রাইস।
১২ মিনিটে দুই গোল হজম করে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে রিয়াল। সেই সুযোগে ৭৫তম মিনিটে লুইস-স্কেলির বাড়ানো পাস থেকে গোল করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার মাইকেল মেরিনো। স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-০। শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধান ধরে রেখে প্রথম লেগে বড় জয় নিশ্চিত করে মিকেল আর্তেতার দল।
তবে দুর্ভাগ্য রিয়াল মাদ্রিদের পিছু ছাড়েনি ম্যাচের শেষ মুহূর্তেও। যোগ করা সময়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে লাল কার্ডে মাঠ ছাড়েন মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা, যা তাদের দ্বিতীয় লেগের পরিকল্পনায় বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে।
এখন রিয়ালের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ—১৬ এপ্রিল সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ফিরতি লেগে ঘুরে দাঁড়িয়ে এই বিশাল ব্যবধান পুষিয়ে ফাইনালের পথে এগিয়ে যাওয়া। কিন্তু তার আগে আর্সেনালের এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে ইউরোপে তাদের শক্ত অবস্থান আরও পাকাপোক্ত করল।