শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| সন্ধ্যা ৭:১৬

সাকিব আল হাসানের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ২৪, ২০২৫ ৩:৫৪ অপরাহ্ণ
সাকিব আল হাসানের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ

সাকিব আল হাসানের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ

বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই নির্দেশটি আসে আইএফআইসি ব্যাংকের চার কোটি ১৫ লাখ টাকা প্রতারণার একটি মামলার প্রেক্ষিতে। রোববার (২৩ মার্চ, ২০২৫) এই ঘটনা দেশের ক্রীড়া ও আর্থিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সাকিব, যিনি বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের গর্ব হিসেবে পরিচিত, তার বিরুদ্ধে এমন একটি গুরুতর অভিযোগ এবং আদালতের নির্দেশ জনমনে নানা প্রশ্ন তুলেছে।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, আইএফআইসি ব্যাংকের অভিযোগ, সাকিব আল হাসান একটি ব্যবসায়িক লেনদেনে জড়িত ছিলেন, যেখানে তিনি ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। এই ঋণের পরিমাণ চার কোটি ১৫ লাখ টাকা, যা পরিশোধ না করায় ব্যাংক আদালতের দ্বারস্থ হয়। ব্যাংকের দাবি, সাকিব এই অর্থ ফেরত দেওয়ার কোনো উদ্যোগ না নিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। এরপর আদালত, প্রমাণপত্র পর্যালোচনা করে, তার সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ জারি করেন। এই নির্দেশের ফলে সাকিবের ব্যাংক হিসাব, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এবং অন্যান্য আর্থিক সম্পদ জব্দ করার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

সাকিব আল হাসানের আইনজীবী দল এই অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা জানিয়েছে, এটি একটি ভুল বোঝাবুঝির ফল এবং সাকিবের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তারা আদালতে এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করছেন। তবে, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের অবস্থানে অনড়। তারা বলছে, সাকিবের কাছ থেকে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি, যার ফলে তারা আইনি পথ বেছে নিয়েছে।

এই ঘটনা সাকিবের রাজনৈতিক ও ক্রীড়া জীবনের প্রেক্ষাপটেও আলোচনায় এসেছে। ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাকিব। তবে, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সংসদ ভেঙে দেওয়ায় তিনি সেই পদ হারান। এছাড়া, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় একজন পোশাক শ্রমিকের হত্যার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়, যা তার ইমেজে বড় ধরনের আঘাত হানে। এই নতুন আর্থিক মামলা তার জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ভক্ত ও সমালোচকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একদিকে, তার ভক্তরা মনে করছেন, সাকিবের মতো একজন সফল ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হতে পারে। অন্যদিকে, সমালোচকরা বলছেন, তার আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতার অভাব এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। এছাড়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতে তার জাহাজ ও বোট ব্যবসায় বিনিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে জানতে চেয়েছেন, তিনি কি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে এই বিনিয়োগ করেছেন?

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মামলা সাকিবের ক্রীড়া ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিগত জীবনে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হিসেবে খ্যাত সাকিবের সম্পদের পরিমাণ বিভিন্ন সূত্রে ৩৫ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি বলে দাবি করা হয়। এই ঘটনা তার ভাবমূর্তি এবং আর্থিক স্থিতিশীলতার ওপর কী প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি