ভ্যাকসিন কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলো বেক্সিমকো ফার্মা
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড (বেক্সিমকো ফার্মা) কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। বুধবার (১৯ মার্চ) প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৭ ও ১৮ মার্চ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর। এসব প্রতিবেদনে বেক্সিমকো ফার্মাকে ভ্যাকসিন কেনায় দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করা হয়েছে, যা কোম্পানি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এসব সংবাদ তাদের সুনাম ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি শেয়ারহোল্ডার ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও বিভ্রান্ত করছে।
বেক্সিমকো ফার্মা জানায়, তারা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট (এসএসআই) থেকে ১.৫ কোটি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা (কোভিশিল্ড) ভ্যাকসিন ক্রয়ে যুক্ত ছিল, যার মোট ব্যয় ছিল ৬০০ কোটি টাকা। এতে প্রতি ডোজে ১ ডলার সার্ভিস ফি বাবদ প্রতিষ্ঠানটি ১২০ কোটি টাকা পেয়েছে। অথচ কিছু সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে যে কোম্পানিটি ২২ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির তদন্তের আওতায় রয়েছে, যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।
প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, কোভিড-১৯ মহামারির সময় ধনী দেশগুলো আগেভাগেই ভ্যাকসিন প্রি-বুক করেছিল, ফলে বাংলাদেশসহ অনেক দেশ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। সরকার তখন বিভিন্ন উৎস থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি জটিল ছিল। এই প্রেক্ষাপটে বেক্সিমকো ফার্মা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে আলোচনা করে এবং বাংলাদেশে একমাত্র পরিবেশক হিসেবে মনোনীত হয়।
২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ কোভিশিল্ড পায় এবং ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। বেক্সিমকো ফার্মা দাবি করেছে, এই সাফল্যের পেছনে তাদের পেশাদারিত্ব ও নিরলস প্রচেষ্টা কাজ করেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার সাধারণত বিদেশি প্রস্তুতকারকদের কাছ থেকে সরাসরি ভ্যাকসিন কেনে না; বরং নির্ভরযোগ্য সংস্থার মাধ্যমে সংগ্রহ করে। সিরাম ইনস্টিটিউট সরাসরি সরকারের সঙ্গে চুক্তি করতে অস্বীকৃতি জানায়, ফলে বেক্সিমকো মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে।
বেক্সিমকো ফার্মা আরও জানায়, কিছু সংবাদমাধ্যম ভুলভাবে তথ্য উপস্থাপন করেছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে সরকার উচ্চমূল্যে ভ্যাকসিন কিনতে বাধ্য হয়েছে। বাস্তবে, চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ভারতের সমান বা কম মূল্যে ভ্যাকসিন পেয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জোর দিয়ে বলেছে, তারা সব লেনদেন স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে এবং কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নয়। তারা গণমাধ্যমকে বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছে।