শুক্রবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৫| রাত ৮:৩১

যুক্তরাষ্ট্রে ইংরেজি সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা ট্রাম্পের

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ৩, ২০২৫ ৫:২৫ অপরাহ্ণ
যুক্তরাষ্ট্রে ইংরেজি সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রে ইংরেজি সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা ট্রাম্পের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে ইংরেজিকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এই পদক্ষেপটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরকারি ভাষা প্রতিষ্ঠা করলো।

ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশটি সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সময়কার একটি নির্দেশনা বাতিল করেছে, যেখানে ফেডারেল সংস্থা ও তহবিলপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইংরেজি না জানা ব্যক্তিদের ভাষা সহায়তা প্রদান বাধ্যতামূলক ছিল। নতুন আদেশের ফলে, এই সংস্থাগুলো ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষায় সেবা ও নথি প্রদান চালিয়ে যাবে কিনা, তা তাদের নিজস্ব বিবেচনার ওপর নির্ভর করবে।

আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, “ইংরেজিকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হলে তা কেবল যোগাযোগকে সহজতর করবে না, বরং অভিন্ন জাতীয় মূল্যবোধকেও শক্তিশালী করবে। এটি আরও সুসংহত ও দক্ষ সমাজ গঠনে সহায়ক হবে।” এতে আরও বলা হয়েছে, “নতুন আমেরিকানদের স্বাগত জানানোর ক্ষেত্রে আমাদের জাতীয় ভাষা শেখার ও গ্রহণের নীতি যুক্তরাষ্ট্রকে আরও ঐক্যবদ্ধ করতে সাহায্য করবে এবং নতুন নাগরিকদের আমেরিকান স্বপ্ন অর্জনের পথে ক্ষমতায়িত করবে।”

যুক্তরাষ্ট্রে পূর্বে কোনো ফেডারেল পর্যায়ে সরকারি ভাষা নির্ধারিত ছিল না, যদিও ইংরেজি সর্বত্র ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ইংরেজিকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলো। এর আগে, প্রায় ৩০টি অঙ্গরাজ্য ইংরেজিকে তাদের সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

এই আদেশের ফলে অভিবাসন, ভোটাধিকার এবং অন্যান্য বিষয়ে ইংরেজি না জানা ব্যক্তিদের জন্য কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে অধিকারকর্মী ও সংগঠনগুলো উদ্বিগ্ন। তারা মনে করছেন, এই পদক্ষেপটি যুক্তরাষ্ট্রের বহুভাষিক ও বহুসাংস্কৃতিক সমাজের জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসন এর আগেও ভাষা সংক্রান্ত বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রেসিডেন্টের প্রথম মেয়াদে হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটের স্প্যানিশ সংস্করণ সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যা পরবর্তীতে ২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের সময় পুনঃস্থাপন করা হয়। নতুন নির্বাহী আদেশের পর এই সংস্করণটি পুনরায় সরানো হবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

মার্কিন সেন্সাস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪ কোটি বাসিন্দার মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষায় কথা বলেন। এর মধ্যে স্প্যানিশ, বিভিন্ন চীনা ভাষা এবং আরবি অন্যতম। এছাড়া, ১৬০টিরও বেশি নেটিভ আমেরিকান ভাষা যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত রয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ভাষা নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নির্দেশ করে। ইংরেজিকে সরকারি ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার এই পদক্ষেপটি দেশের অভ্যন্তরীণ সংহতি ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। তবে, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বহুভাষিক সমাজে কী প্রভাব পড়বে, তা সময়ই বলে দেবে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি