থমথমে কুয়েট, রামদা হাতে ভাইরাল যুবদল নেতা বহিষ্কার
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায়। দফায় দফায় সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আজ সকাল থেকেই প্রধান ফটকের চারপাশে অবস্থান নিয়েছেন, আর শিক্ষার্থীদের একাংশ হল ছাড়তে শুরু করেছে।
এদিকে, সংঘর্ষের সময় রামদা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। তার রামদা হাতে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যুবদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে খুলনা জেলা দৌলতপুর থানা যুবদলের সহসভাপতি মাহবুবুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মীদের তাঁর সঙ্গে কোনো ধরনের সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সংঘর্ষের পর কুয়েটের একাডেমিক পরিবেশ ভেঙে পড়েছে। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী দেবাঞ্জন রায় হল ছাড়ার সময় বলেন, “পরিস্থিতি যা মনে হচ্ছে, তাতে একাডেমিক কার্যক্রম আরও কিছুদিন বন্ধ থাকতে পারে। নিরাপত্তার জন্য হল ছেড়ে যাচ্ছি।”
মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ হয়, যাতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। রাতে কিছু শিক্ষার্থী প্রেস ব্রিফিং করে পাঁচ দফা দাবি জানায়—কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি, উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ ইত্যাদি। তারা আজ দুপুর ১টার মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের সময়সীমা বেঁধে দেয় এবং তা পূরণ না হলে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়।
এদিকে, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি আজ দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সেখানে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, কুয়েট ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. নাজমুল হাসান জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে, তবে এখনো কোনো মামলা হয়নি। পুলিশ ক্যাম্পাসের গেটে অবস্থান নিয়েছে এবং শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।