হাসিনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ, জানালেন প্রেস সচিব
জাতিসংঘের সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বাংলাদেশে গত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের ওপর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার এবং শেখ হাসিনার কঠোর দমন-পীড়নের চিত্র। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে শফিকুল আলম লিখেছেন, “ড. ইউনূসের দূরদর্শিতা এবার বাস্তবে রূপ নিয়েছে। জাতিসংঘের এই তদন্ত প্রতিবেদন শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ওপর শেষ পেরেক মেরে দিয়েছে। তার রাজনীতিতে ফিরে আসার যে ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল, সেটাও এখন শেষ।” তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন শেখ হাসিনার সরকারের ভূমিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নানা অভিযোগ ছিল, কিন্তু জাতিসংঘের এই নিরপেক্ষ তদন্ত তার শাসনামলের সব অন্যায়ের চিত্র উন্মোচন করেছে।
শফিকুল আরও বলেন, আওয়ামী লীগের যদি ভবিষ্যতে রাজনীতি করতে হয়, তবে শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়েই তাদের পথ চলতে হবে এবং জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। “যদি আওয়ামী লীগ ও তাদের সেই বিশাল সংখ্যক কর্মী, যারা জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন না, দলকে পুনরুজ্জীবিত করতে চান, তাহলে একমাত্র পথ হলো শেখ হাসিনার পরিবারকে প্রত্যাখ্যান করা এবং জাতির কাছে স্পষ্ট ক্ষমা চাওয়া,”—বলেন তিনি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার পতন ও রাজনীতি থেকে নির্বাসন সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পরিণতির চেয়েও কঠিন। “এরশাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও রাজনৈতিকভাবে টিকে ছিলেন, কারণ তার শাসনামলে আন্তর্জাতিক মহলের তেমন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, হত্যা ও নির্যাতনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে দায়ী হয়ে পড়েছে। তার ভোট কারচুপির ঘটনা ছিল নির্লজ্জ ও স্পষ্ট, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে,”—বলেন শফিকুল।
শেখ হাসিনার সরকার আন্তর্জাতিক মহল থেকে দীর্ঘদিন সমর্থন পেলেও, শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘের তদন্ত তাদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে বলে মত দেন শফিকুল আলম। তার ভাষায়, “প্রতিবার যখন তার স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হয়েছে, তখন আন্তর্জাতিক সমর্থন তাকে রক্ষা করেছিল। কিন্তু এবার জাতিসংঘের সত্য অনুসন্ধান প্রতিবেদন তাদের সমস্ত প্রচেষ্টা ধ্বংস করে দিয়েছে।”
স্ট্যাটাসের শেষে তিনি সংক্ষেপে বলেন, “দুঃখিত, আপা! সব শেষ!!”