মঙ্গলবার, ১১ই মার্চ, ২০২৫| রাত ১২:২৭

‘রুম খালি কর, নইলে তালা দেবো’, শিক্ষার্থীকে সমন্বয়কের হুমকি

প্রতিবেদক
staffreporter
ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫ ৪:২৬ অপরাহ্ণ
‘রুম খালি কর, নইলে তালা দেবো’, শিক্ষার্থীকে সমন্বয়কের হুমকি

‘রুম খালি কর, নইলে তালা দেবো’, শিক্ষার্থীকে সমন্বয়কের হুমকি

‘প্রশাসন কিছু না, আমরা যা সিদ্ধান্ত নেবো, তাই মানতে হবে। তোকে এখন থেকে পাঁচ মিনিটের সময় দেওয়া হলো, এর মধ্যে ব্যাগ গুছিয়ে হল থেকে বের হয়ে যাবি।’—এভাবেই এক শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার হুমকি দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক এমরান হোসেন। তিনি ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) এ নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির কাছে তিনজনের নামে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন ভুক্তভোগী মো. রাহিম। তিনি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, গত তিন মাস ধরে একদল শিক্ষার্থীর মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তিনি।

১ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার পর কয়েকজন শিক্ষার্থী স্লোগান দিতে দিতে তার কক্ষের সামনে এসে দরজায় কড়া নাড়ে। দরজা খোলার পর তারা কক্ষে ঢুকে তাকে কঠোর ভাষায় হুমকি দিয়ে বলেন, ‘১০ মিনিটের মধ্যে রুম খালি কর, নইলে রুম তালা দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিছু না, আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, সেটাই চূড়ান্ত।’

এ সময় নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী আরও ভয় দেখিয়ে বলেন, ‘রুম না ছাড়লে ছাত্রলীগের মতো কইরা পিটামু, তোকে মারা ওয়ান-টু ব্যাপার।’

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, এর আগেও ৩১ জানুয়ারি রাত ১২টা ৫০ মিনিটে হাসিব ও রাজু তাকে ডাইনিং সংলগ্ন সিঁড়ির সামনে ডেকে প্রকাশ্যে হেনস্তা করেন। তারা বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির মধ্যে রুম না ছাড়লে সব জিনিসপত্র ফেলে দেবো। পারলে তোর কোনো বাপ আছে নিয়ে আসিস!’

ভুক্তভোগী রাহিম বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারণে আমি আমার টিউশন হারিয়েছি। ফলে থাকার বিকল্প কোনো জায়গা নেই। কিন্তু বারবার হুমকি ও মানসিক নির্যাতনের কারণে আমি মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

শুধু রাহিম নন, অভিযুক্ত এমরান ও হাসিবের নেতৃত্বে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ পরাণ রাজু মিয়াজিসহ আরও ২০ জন শিক্ষার্থীকে হল ছাড়তে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত হাসিব বলেন, ‘হিট অব দ্য মোমেন্টে এই কথা বলেছি। ৫ আগস্টের পর যারা হলে উঠবে, তারা সবাই রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে। তাই হল থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে আন্দোলনের পর ওঠা শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়া হবে।’

নজরুল হলের প্রভোস্ট মো. হারুন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এমন আচরণ মোটেও কাম্য নয়। তারা আমার কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তবে এখনো আমার কাছে কোনো লিখিত কিংবা মৌখিক অভিযোগ আসেনি।’

সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান রাহাত বলেন, ‘অভিযোগপত্র পেয়েছি। আমরা প্রক্টরিয়াল বডি বসে সিদ্ধান্ত নেবো এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - সর্বশেষ

আপনার জন্য নির্বাচিত